পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বিক্রিতে ভাটা দিওয়ালি পুতুলের, চিন্তায় কুমোরপাড়া - দেওয়ালি পুতুল

দীপাবলির সময়, দিওয়ালি পুতুল কেনে জঙ্গলমহলের মানুষ ৷ কিন্তু এবছর ভিন্ন চিত্র ৷ কোরোনা আবহে বাজার খারাপ ৷ মানুষের রুজি-রোজগার নেই ৷ হাতে টাকা নেই, শখ মেটাবে কীভাবে? চিন্তায় কুমোরপাড়ার শিল্পীরা ৷

sale of diwali dolls is low
বিক্রিতে ভাটা দেওয়ালি পুতুলের

By

Published : Nov 13, 2020, 9:47 PM IST

মেদিনীপুর, 13 নভেম্বর : দীপাবলির সময় দিওয়ালি পুতুল কেনা সখ জঙ্গলমহলের মানুষের ৷ আট থেকে আশি সবার পছন্দ এই পুতুল কেনা ৷ কিন্তু এবার নস্টালজিয়ায় থাবা বসাচ্ছে কোরোনা ৷ দীপাবলির সময় এখানে বানানো হয় দিওয়ালি ঘর ৷ আর সেই ঘরের দেওয়ালে টাঙানো হয় এই দিওয়ালি পুতুল ৷ কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের ফলে মানুষের রুজি-রোজগার বন্ধ ৷ অর্থের জোগান নেই ৷ তাই বাজারে চাহিদা খুব কম ৷ তাই কুমোরপাড়ার শিল্পীরা এবারে দিওয়ালির পুতুল গড়ার পরিমাণ কমিয়েছে। তবে পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাঁরা করে চলেছেন দিওয়ালি পুতুলের কাজ। বাড়িতে তৈরি করে বাড়ির পাশেই পসরা সাজিয়েছেন শিল্পীরা ৷ বিক্রি করার জন্য বসে আছেন ৷ সাজানো রয়েছে, এক হাত দুই হাত, এক প্রদীপ, পঞ্চ প্রদীপ এবং চার হাতের দিওয়ালি পুতুল। কিন্তু কিনবে কে?

কুমোরপাড়ায় শিল্পীরা দিওয়ালি এবং কালী পূজা উপলক্ষে দেওয়ালি পুতুল গড়েন রাত জেগে।এই উৎসবে দেওয়ালি পুতুল তৈরি করে বাড়ির পরিবারের সকল সদস্য।এই পুতুল দেশ-বিদেশের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্য এবং জেলায় বিক্রি হয় হাজারে হাজারে। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসে দিওয়ালি পুতুলের বিক্রির প্রচলন। কারণ দিওয়ালি পুতুল তৈরির নস্টালজিয়ায় ভোগেন জঙ্গলমহলের মানুষ। আট থেকে 80, ছোটো থেকে বড় সবাই দিওয়ালি ঘর তৈরি করে তাতে দেওয়াল পুতুল সাজিয়ে আতশবাজি ফাটিয়ে রঙে ভরিয়ে তোলে জঙ্গলমহলে। কিন্তু এবারে কোরোনার থাবা যার জেরে পুতুলে পড়েছে ভাটা। কেননা কোরোনা সংক্রমণ এবং তাতে নগদ যোগানের অভাব তার ফলেই দিওয়ালি বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। যেখানে প্রতি বছর হাজার দুয়েক দিওয়ালি করতেন সেখানে এবারে গড়ছেন মাত্র 500 তাও আবার অতি অল্প দামের। কিন্তু মানুষের চাহিদা কম থাকায় দিওয়ালিতে বিক্রি করে কিছুতেই মন ভরছে না এই কুমোরপাড়ার শিল্পীদের। তাই সকলেই আশা করেছিলেন হয়ত এই কালীপূজা ও দিওয়ালিতে কোরোনা সংক্রমণ সরিয়ে বাজার জমে উঠবে। কিন্তু বাজার নিম্নমুখী ৷ হতাশার ছাপ তাঁদের চোখে-মুখে। তবে বাজার যাই হোক, ধার করে হলেও পুতুল গড়েন তাঁরা কেবল মাত্র পরম্পরাকে ধরে রাখার জন্য।

রুজি-রোজগার নেই, বিক্রিতে ভাটা দিওয়ালি পুতুলের

কুমোরপাড়ার শিল্পী অরুণ পাল কবি বলেন," মানুষের যতটুকু চাহিদা ততটুকুই তৈরি করেছি এবারে ৷ মানুষ সব সাধপূরণ ছেড়ে দিয়েছে ৷ এখন প্রয়োজনটুকু কেবল তারা পূরণ করছে। যদিও দেওয়ালি প্যান্ডেল হয় কলকাতা এবং ঝাড়গ্রামে ৷ তবুও দেওয়ালি পুতুল করছি আমরা কেবল মাত্র পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। আগে যেখানে হাজার করতাম এবারে 500 করেছি ৷ তাও মানুষ যে কিনবে, তা বলা যাচ্ছে না ৷ হাতে টাকা নেই ৷ তবে আমরা অপেক্ষায় আছি যদি বাজার ভালো হয়।"

শিল্পী সৈকত পাল কবি বলেন, " কোরোনার জেরে যেমন দিওয়ালিতে ভাটা পড়েছে তেমনি আতশবাজি বন্ধের ফলে কিছুটা ভাটা পড়েছে দিওয়ালির বাজারে। কারণ আতশবাজি দিওয়ালি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আতশবাজি বন্ধ থাকায় দিওয়ালির ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে বিগত বছর যেভাবে বাজার গিয়েছে এবার সেই বাজার নেই। তবুও আশায় আছি বাজার ভালো হওযার। তবে এবারে গতবারের থেকে কম করেছি আমরা ৷" যদিও দিওয়ালি পুতুলের এই পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে দেওয়ালে পুতুল তৈরি করে চলেছি বিগত বছর ধরে। বাজার যাই হোক ৷ ধার করে হলেও পুতুল গড়েন তাঁরা ৷ কেবলমাত্র পরম্পরাকে ধরে রাখার জন্য কাজ করছেন শিল্পীরা ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details