মেদিনীপুর, 13 নভেম্বর : দীপাবলির সময় দিওয়ালি পুতুল কেনা সখ জঙ্গলমহলের মানুষের ৷ আট থেকে আশি সবার পছন্দ এই পুতুল কেনা ৷ কিন্তু এবার নস্টালজিয়ায় থাবা বসাচ্ছে কোরোনা ৷ দীপাবলির সময় এখানে বানানো হয় দিওয়ালি ঘর ৷ আর সেই ঘরের দেওয়ালে টাঙানো হয় এই দিওয়ালি পুতুল ৷ কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের ফলে মানুষের রুজি-রোজগার বন্ধ ৷ অর্থের জোগান নেই ৷ তাই বাজারে চাহিদা খুব কম ৷ তাই কুমোরপাড়ার শিল্পীরা এবারে দিওয়ালির পুতুল গড়ার পরিমাণ কমিয়েছে। তবে পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাঁরা করে চলেছেন দিওয়ালি পুতুলের কাজ। বাড়িতে তৈরি করে বাড়ির পাশেই পসরা সাজিয়েছেন শিল্পীরা ৷ বিক্রি করার জন্য বসে আছেন ৷ সাজানো রয়েছে, এক হাত দুই হাত, এক প্রদীপ, পঞ্চ প্রদীপ এবং চার হাতের দিওয়ালি পুতুল। কিন্তু কিনবে কে?
কুমোরপাড়ায় শিল্পীরা দিওয়ালি এবং কালী পূজা উপলক্ষে দেওয়ালি পুতুল গড়েন রাত জেগে।এই উৎসবে দেওয়ালি পুতুল তৈরি করে বাড়ির পরিবারের সকল সদস্য।এই পুতুল দেশ-বিদেশের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্য এবং জেলায় বিক্রি হয় হাজারে হাজারে। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসে দিওয়ালি পুতুলের বিক্রির প্রচলন। কারণ দিওয়ালি পুতুল তৈরির নস্টালজিয়ায় ভোগেন জঙ্গলমহলের মানুষ। আট থেকে 80, ছোটো থেকে বড় সবাই দিওয়ালি ঘর তৈরি করে তাতে দেওয়াল পুতুল সাজিয়ে আতশবাজি ফাটিয়ে রঙে ভরিয়ে তোলে জঙ্গলমহলে। কিন্তু এবারে কোরোনার থাবা যার জেরে পুতুলে পড়েছে ভাটা। কেননা কোরোনা সংক্রমণ এবং তাতে নগদ যোগানের অভাব তার ফলেই দিওয়ালি বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। যেখানে প্রতি বছর হাজার দুয়েক দিওয়ালি করতেন সেখানে এবারে গড়ছেন মাত্র 500 তাও আবার অতি অল্প দামের। কিন্তু মানুষের চাহিদা কম থাকায় দিওয়ালিতে বিক্রি করে কিছুতেই মন ভরছে না এই কুমোরপাড়ার শিল্পীদের। তাই সকলেই আশা করেছিলেন হয়ত এই কালীপূজা ও দিওয়ালিতে কোরোনা সংক্রমণ সরিয়ে বাজার জমে উঠবে। কিন্তু বাজার নিম্নমুখী ৷ হতাশার ছাপ তাঁদের চোখে-মুখে। তবে বাজার যাই হোক, ধার করে হলেও পুতুল গড়েন তাঁরা কেবল মাত্র পরম্পরাকে ধরে রাখার জন্য।