কুড়মি নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক মেদিনীপুর, 7 মে: "কুড়মিদের আন্দোলনের সর্বাত্মক বিরোধীতা করা হবে! কিছু কুড়মি নেতা স্ব-ঘোষিত খালিস্তানি নেতার মতো আচরণ করছেন । সরকারকে যাঁরা টেনে নামানোর চেষ্টা করছেন তাঁদের কোনওভাবেই সমর্থন নয় ।" শনিবারের একটি সভা থেকে কুড়মি আন্দোলন নিয়ে এইরকমই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন পিংলার তৃণমূল বিধায়ক তথা মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি । 14 মে আদিবাসী জমায়েতের ডাক দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতা ।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের তালিকাভুক্ত করার জন্য কয়েকদিন আগে আন্দোলনে নেমে ছিলেন কুড়মিরা ৷ তার জেরেই অবরুদ্ধ হয় রেল চলাচল । রাজ্যের তরফে বৈঠকের ডাক পেয়েও আশানুরূপ ফল না মেলায় আন্দোলন চলতে থাকে ৷ এরই মধ্যে আরও একটি পদক্ষেপ করে কুড়মিরা। তাদের তরফে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানানো হয়, নিজেদের বাড়ির দেওয়ালে কোনওরকম রাজনৈতিক প্রচার করতে দেওয়া হবে না। ঘাঘরগেরা কেন্দ্রীয় কমিটির এই সিদ্ধান্তের পর জঙ্গলমহলের একাধিক এলাকায় কুড়মিরা রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপন মুছে সেখানে 'জয় গরাম' লিখে দিয়েছেন। গরাম তাদের আরাধ্য।
এই আবহেই অজিত মাইতির গলায় রীতিমতো হুমকির সুর শোনা গেল। তাঁর দাবি, তৃণমূল ও রাজ্য সরকারকে ছোট করার চেষ্টা করা হচ্ছে এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে । এই আন্দোলনের সর্বাত্মক বিরোধিতা করা হবে । কোথাও এই আন্দোলনকে মদত করা হবে না বলেও দাবি অজিত মাইতির । এখানেই শেষ নয়, কুড়মি আন্দোলনের পিছনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মদত রয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি । অন্যদিকে, দেওয়াল লিখন করতে দেওয়া হবে না বলে যে ফরমান জারি করেছে কুড়মি সমাজ তা মানা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন অজিত।
আরও পড়ুন:কুড়মি সমাজের সঙ্গে আলোচনায় রফাসূত্র বেরল না, আবার কি শুরু হবে আন্দোলন ?
তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলায় । এই বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "এই মন্তব্য যদি উনি করে থাকেন এটা ওঁর সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত । এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই । উনি যে মন্তব্য করেছেন আমার মনে হয় ওঁর মাথার সমস্যা রয়েছে । তার জন্যই উনি অসংলগ্ন কথা বলছেন । আমরা এই মন্তব্যকে কোনওভাবে সমর্থন করছি না ।"
এই ইস্যুতে শাসকদল তৃণমূলকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিজেপি শিবির । এইবিষয়ে বিজেপি মুখপাত্র অরূপ দাস জানান, কেউ কিছু চাইতে গেলেই তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলেই ব্যাখ্যা করে শাসকদল । তাই এই প্রাচীন সম্প্রদায় মানুষকে তারা বঞ্চিত করে রেখেছে ।