পশ্চিম মেদিনীপুর, 17 ডিসেম্বর: চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ৷ ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। নার্সিংহোমে আপাতত চিকিৎসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ ভর্তি থাকা রোগীদের অন্য নার্সিংহোমে স্থানান্তর করারও নির্দেশ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য অধিকারিক ৷
পেটের যন্ত্রণার উপসর্গ নিয়ে গত বুধবার বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি হয়েছিলেন মেদিনীপুর শহরের স্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বছর বাহান্নর অমল গোপ। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় অমল গোপের। মৃতের দাদা কমল গোপ অভিযোগ করে বলেন, "নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়ার সময় ভাইয়ের অত সমস্যা ছিল না ৷ রাতের দিকে বাড়ে ৷ কোনও নার্স বা চিকিৎসক ছিল না ৷ সকালে অবস্থা খারাপ হলে চিকিৎসককে ফোন করে ডাকা হয় ৷ কিন্তু তিনি অনেক দেরিতে আসেন ৷ চোখের সামনে ভাই ছটফট করতে করতে মারা গেল ৷"
মৃত অমল গোপের জামাইবাবু ভোলা কুণ্ডু চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বলেন, "এখানে রোগীদের নিয়ে ব্যবসা শুরু হয়েছে ৷ অবিলম্বে এর ব্যবস্থা নিতে হবে ৷" এই বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শঙ্কর সড়ঙ্গী জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরেই উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল ওই নার্সিং হোমে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে এসেছে। তবে, এখনও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা বাকি আছে। আমরা সমস্ত রিপোর্টই স্বাস্থ্য ভবনে পাঠাব। তদন্ত শেষ না হওয়া অবধি ওই বেসরকারি নার্সিং হোম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি আগামী সাত দিনের মধ্যে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ-সহ শো-কজের উত্তর দিতে হবে।
মূলত, এই ঘটনায় পরিজনদের তরফে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই শনিবার বিকেলে বেসরকারি নার্সিংহোমে নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডঃ সৌম্যশঙ্কর সড়ঙ্গী। পাশাপাশি নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা চিকিৎসারত রোগীদের আগামী দু'দিনের মধ্যে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷ এরই সঙ্গে আগামী 19 ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বেসরকারি নার্সিংহোম বন্ধ রাখার নির্দেশও জারি করা হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে এরকমই এক রোগী মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ উঠেছিল স্পন্দন নামক এক বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ৷ সেই ঘটনারও তদন্ত চলছে।