Couple Bodies Recovered: 'জ্যাংগো যেন অনাথ না হয় !' সুইসাইড নোটে আর্তি দম্পতির

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ৷ 'সুইসাইড নোট'-এ রয়েছে তাঁদের প্রিয় পোষ্য জ্যাংগোর কথা ! পুলিশের উদ্দেশে কী আর্তি রয়েছে তাতে ? আর জ্যাংগো ? পরিবার হারিয়ে সেই বা কেমন আছে ?

ঘাটাল, 14 এপ্রিল:পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উদ্ধার হওয়া 'সুইসাইড নোট'-এর বয়ান শুনে চোখে জল প্রতিবেশীদের ৷ কারণ, সেই 'সুইসাইড নোট'-এ দম্পতির মৃত্যুর কারণ যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনই লেখা হয়েছে জ্যাংগোর কথা ! জ্য়াংগো আসলে একটি সারমেয় ৷ বয়স 9 বছর ৷ শান্ত স্বভাবের এই গোল্ডেন রিট্রিভারটি বড়ই প্রিয় ছিল দেবাশিস ও জলির ৷ ঘোষ দম্পতির কাছে সে ছিল সন্তানসম ৷ তাই হয়তো জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁরা তার কথা ভেবে গিয়েছেন ৷ প্রিয় পোষ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়েছেন ৷ যদিও এই দম্পতির মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কথা বলেনি ঘাটাল থানার পুলিশ ৷

উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে ঘাটালের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় দেবাশিস ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী জলি ঘোষের ঝুলন্ত দেহ ৷ তাঁরা ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ৷ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দেনার দায়ে আত্মঘাতী হয়েছেন এই দম্পতি ৷ তাঁদের ঘরে একটি চিঠি পাওয়া গিয়েছে ৷ সেটি দেবাশিসের লেখা 'সুইসাইড নোট' বলে মনে করা হচ্ছে ৷ সেই চিঠিতে জ্যাংগোর কথাও লিখেছেন তিনি ৷ জানিয়েছেন, জ্য়াংগোকে তাঁরা ভীষণ ভালোবাসেন ৷ কিন্তু, আর তাঁরা তার দেখভাল করতে পারবেন না ৷ কারণ, তাঁরা চিরকালের মতো তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন !

জ্য়াংগো কখন কী খাবার খায়, কোন চিকিৎসক তাকে দেখেন, সেসবই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এমনকী, জ্য়াংগোর প্রিয় গুঁড়ো দুধের কৌটোটিও বাইরে বের করে রেখে গিয়েছেন দম্পতি ৷ কারও বুঝতে যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য সেই কৌটোর গায়ে হাতে লেখা লেবেলও সেঁটে দিয়েছেন ৷

কিন্তু, এসব দেখে পুলিশ পড়েছে মহা ফাঁপড়ে ! অবলা জন্তুটা তাঁদের মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকছে ৷ তাকে দেখলে তখন বড্ড মায়া হয় ! কিন্তু, জ্য়াংগো এবার থাকবে কোথায় ? 'সুইসাইড নোট'-এ আশিস লিখে গিয়েছেন, তাঁদের প্রিয় পোষ্যকে যেন বন্যপ্রাণ বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু, প্রশ্ন হল, ঘরের পোষ্যের দায়িত্ব কি আদৌ নেবে তারা ? তাই খুনের তদন্ত ছাড়াও পুলিশকে ভাবাচ্ছে জ্য়াংগোর ভবিষ্যৎ ৷ জ্যাংগো নিজে কী বুঝছে, তা বোঝা মুশকিল ৷ তবে, সারাদিন চুপচাপই থেকেছে সে ৷ পুলিশের কাজে, সাংবাদিকদের কাজে কোনও সমস্য়া তৈরি করেনি ৷ মাঝেমধ্যে শুধু কৌতূহলী চোখে এদিক-ওদিক তাকিয়েছে ৷ তারপর আবার শুয়ে পড়েছে মাথা নিচু করে ৷ হয়তো তার দু'চোখ খুঁজছে চেনা দুই মানুষের মুখ ! শুনতে চাইছে তাঁদের গলায় আদুরে ডাক !