কুঁয়াপুর, 5 সেপ্টেম্বর : লোহার শেকল দিয়ে বাড়ির উঠানে গত দশ বছর ধরে বেঁধে রাখতে হয়েছে ৷ কারণ তা না হলে বৃদ্ধা মা ভিক্ষা করতে বেরতে পারবেন না ৷ ভিক্ষা ছাড়া আবার অন্ন সংস্থানের কোনও উপায়ও নেই ৷ তাই বছর সাতাশের মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে উঠোনের খুঁটিতে বেঁধে রেখেই প্রতিদিন মা বের হন ভিক্ষা করতে ৷ বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গেই ছেলের চিকিৎসার জন্যও সাহায্য চান মা ৷ এমনই করুণ ছবি চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মা-ছেলের সংসারের । না মিলেছে সরকারি সাহায্য, না মিলেছে রাজনৈতিক নেতাদের দেখা ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুরের বাসিন্দা ছবি পূজারী ৷ বছর পঁয়তাল্লিশের ছবির বিয়ে হয়ে গিয়েছিল খুব অল্প বয়সেই ৷ স্বামী মারা গিয়েছেন কবে তা ভুলে গিয়েছেন ৷ তারপর থেকেই মা আর ছেলের সংসার ৷ ছেলে প্রশান্তের বয়স এখন বছর সাতাশ হবে ৷ শুরু থেকেই সে অসুস্থ ছিল না ৷ তবে গত বছর দশেক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে প্রশান্ত ৷ একচিলতে ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে মা-ছেলের বসবাস ৷ দিন চলে ভিক্ষা করে ৷
ছেলের চিকিৎসার চেষ্টা করেন ছবি ৷ কিন্তু প্রধান সমস্যা তো একটাই- টাকা ৷ ভিক্ষার উপার্জনে পেটই চলে না, তো চিকিৎসা ৷ ওষুধপত্রের যে ভীষণ দাম ৷ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন ছবি ৷ তবে সাহায্য তেমন কিছুই পাননি ৷ ভিক্ষার টাকা জমিয়েই তাই চেষ্টা চালান ছেলেকে ভাল করে তোলার ৷ কারণ তাঁর বিশ্বাস, এখনও যদি চিকিৎসা করানো যায় তাহলে হয়তো ছেলে ঠিক হয়ে যাবে ৷ আর ভাবেন, যতদিন তিনি রয়েছেন ততদিন তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন ৷