রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরাজ মেদিনীপুরে মেদিনীপুর, 14 জানুয়ারি: রাতের মেদিনীপুরে বেলাগাম দুষ্কৃতীরাজ। কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং করে জেসিবি মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে ফেলা হল পরপর তিনটে দোকান ৷ এই ঘটনার পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে । যদিও পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে সেখানে আসেন খোদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার ৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন তিনি ।
জানা গিয়েছে, শনিবার রাত দুটো থেকে আড়াইটা নাগাদ কয়েকজন দুষ্কৃতী মেদিনীপুর শহরের সংলগ্ন সিনেমা হলের পাশে কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালায় । দুটো জেসিবি মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় দোকানগুলি । এরপরেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে বড় বড় দোকান । শুধু তাই নয়, এই ঘটনার পর বন্দুক নিয়ে রীতিমতো এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায় দুষ্কৃতী বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ।
রবিবার সকাল হতেই ওই দোকান ভাঙচুর দেখতে হাজির হন জেলার মানুষ থেকে দোকানের মালিকরা ৷ ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ প্রশাসন-সহ মেদিনীপুর পৌরসভার প্রশাসনিক আধিকারিকেরা । তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ৷ যদিও কী কারণে এই দোকানগুলি বড় বড় জেসিবি দিয়ে ভাঙচুর করা হল, তা এখনও স্পষ্ট নয় ৷ সে বিষয়ে প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে শহরবাসীর মনে । তবে এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান । তিনি অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ৷
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার কিছু না বললেও এক পুলিশ আধিকারিক জানান, নিজের মধ্যে দ্বন্দ্বের রাতের অন্ধকারে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে । যদিও বাইরের কোন দুষ্কৃতীর কাজ নয়, তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে । ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সৌরভ সাউ বলেন, "রাতের অন্ধকারে কিছু দুষ্কৃতী এই ধরনের কাণ্ডকারখানা করেছে । আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি । আমাদের প্রায় 50 থেকে 60 লক্ষ টাকার মতন ক্ষতি হয়েছে । আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি ।"
মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, "রাতের অন্ধকারে কয়েকজন দুষ্কৃতী দোকানের দখলদারি নেওয়ার জন্য বন্দুক নিয়ে এসে এই কাণ্ডকারখানা চালায় ৷ আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা করছি । এর সঙ্গে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারেরও দাবি জানাচ্ছি । সেই সঙ্গে এই দোকান ভাঙচুর করার জন্য যে জেসিবি মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলোকেও যেন বাজেয়াপ্ত করা হয় । তার দাবি জানাচ্ছি ৷ মেদিনীপুরে এই ধরনের দুষ্কৃতীরা আজ চলতে দেওয়া যাবে না । রাতের অন্ধকারে লোডশেডিং করে এই ধরনের কাণ্ড ঘটিয়েছে তারা ।"
প্রসঙ্গত, এই জায়গায় একটি সিনেমা হল রয়েছে । দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ এই সিনেমা হল । তারই পার্শ্বস্থ জায়গা নিয়েই কয়েকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেছিল । সূত্রের খবর, তাদের মধ্যে কেউই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে । তবে আদতে কারা এবং কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তদন্ত করে পুলিশ খুঁজে বের করবে ।
আরও পড়ুন:
- লুঠপাটের পর ঘুগনি খেয়ে চম্পট, তদন্তে বেরোল গ্রামের 'ভালো' জামাই ডাকাতদলের সোর্স
- ফোন চুরির অভিযোগে 'শাস্তি', রাস্তায় ফেলে তিন যুবককে বিবস্ত্র করে মার স্থানীয়দের
- তালা ভেঙে শিক্ষিকার ফ্ল্যাটে হানা, বাঁকুড়া পুলিশের জালে এমএ পাশ চোর