পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Stop Child Marriage: সাবাশ! নিজের বিয়ে বন্ধ করতে পঞ্চায়েতে দৌড়ল নাবালিকা

বাল্যবিবাহ বন্ধের অনন্য নজির ৷ পঞ্চায়েতে গিয়ে নিজের বিয়ে নিজেই রুখে দিল নাবালিকা (Child Marriage)৷ বাবা-মাকে দিয়ে 18 বছর না-হলে বিয়ে দেব না বলে মুচলেকা লেখালেন প্রধান ৷ ঠিক কী হয়েছিল সেদিন ?

Etv Bharat
শ্যামলীকে আশ্বস্ত করছেন পঞ্চায়েত প্রধান

By

Published : Feb 28, 2023, 9:10 PM IST

Updated : Mar 1, 2023, 3:18 PM IST

জোর করে বিয়ে দিচ্ছে বাবা-মা, পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গিয়ে বলল নাবালিকা

চন্দ্রকোনা, 28 ফেব্রুয়ারি:পঞ্চায়েত অফিসে তখন মিটিং চলছিল ৷ হঠাৎ একটি মেয়ে হাউমাউ করে দরজার সামনে এসে কাঁদতে থাকে ৷ পঞ্চায়েত প্রধান জিজ্ঞাসা করতেই এক নিশ্বাঃসে নাবালিকা বলে চলে, "কাকু আমাকে বাঁচাও । বাবা-মা জোর করে আমার বিয়ে দিতে চাইছে । আমি নবম শ্রেণিতে পড়ি । আমি লেখাপড়া করতে চাই । আমাকে বাবা-মা ও পাড়া প্রতিবেশীরা বলছে আজ হলেও বিয়ে করতে হবে, দু-বছর পরে হলেও করতে হবে । বিয়ে করতে রাজি না-হওয়ায় বাবা-মা বলছে বিয়ে না-করলে বিষ খেয়ে বা গলায় দড়ি নিয়ে জঙ্গলে গিয়ে মরবি যা ৷ আমি এখন কী করব কাকু ?"

নাবালিকার এহেন কথা শুনে একমুহূর্তও দেরি করেননি পঞ্চায়েত প্রধান (Paschim Medinipur News)৷ তাকে আশ্বস্ত করেন স্কুলে ভর্তি ও পড়াশোনার সমস্ত খরচ নেওয়ার কথা বলে ৷ নাবালিকার বাবা-মাকে ডেকে পাঠান পঞ্চায়েত অফিসে ৷ মেয়ের বয়স 18 বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবে না বলে তাঁদের থেকে মুচলেকাও লিখিয়ে নেন পঞ্চায়েত প্রধান (Minor Girl Stopped her Marriage)। ঘটনার কথা জানান বিডিও এবং পুলিশকে। তবে এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি ৷

মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান নাবালিকার বাড়ি ৷ সে কেমন আছে খোঁজ নেন ৷ কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে ৷ তাদেরও সচেতন করেন নাবালিকা বিয়ে বন্ধে সকলেই যাতে সজাগ হন । পরিবার-সহ পাড়া-পড়শিদেরও বলেন 18 বছর বয়স না-হওয়া পর্যন্ত মেয়ে ও 21 বছর না-হওয়ার পর্যন্ত ছেলের বিয়ে দেওয়া আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ ৷ ধরা পড়লে জেল ও জরিমানা নিশ্চিত ৷

আরও পড়ুন :বর্ধমান জেলায় বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন রোধে পথনাটিকা

এই ঘটনায় মেয়েটির সাহস দেখে কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান ৷ বাহবা জানিয়েছেন নাবালিকাকে ৷ এই বিষয়ে তিনি বলেন, "সোমবার বিকেলে পঞ্চায়েত অফিসে একটি মিটিং চলাকালীন মেয়েটি এসে আমাকে সব কথা জানায় । আমি ওর পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছি ৷ ওর সাহস ও প্রতিবাদের মানসিকতা দেখে আমরা খুশি । এভাবেই সকলে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুক ৷"

বাবা-মা দু'জনেই দিনমজুরের কাজ করেন । নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর্থিক অভাবে বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা । পাড়ার সব মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, তাই নিজের মেয়েরও বিয়ে দিয়ে দিতে চান বাবা ! সেই কারণেই লেখাপড়া বন্ধ করিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিলেন ৷ পড়াশোনা করার আগ্রহ প্রকাশ করে নিজের বিয়ে বন্ধ করার জন্য নাবালিকার এই উদ্যোগের পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন তৎপরতার প্রশংসায় এলাকাবাসী ।

আরও পড়ুন :বাল্যবিবাহ ঠেকাতে ইউনিসেফের সঙ্গে গাঁটছড়া রাজ্য়ের

Last Updated : Mar 1, 2023, 3:18 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details