কেশপুর, 18 অগস্ট: নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে ৷ নির্যাতিতা এখন মেদিনীপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ শুক্রবার আদালত থেকে তার জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নাবালিকাকে প্রথমে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখান থেকে তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ হাসপাতালে আনার পরেও তাকে দীর্ঘ 8 ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার ৷ এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও উঠেছে ৷
সূত্রের খবর, চতুর্থ শ্রেণির এই পড়ুয়া পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষক পরিবারের মেয়ে ৷ বৃহস্পতিবার সকালে সে স্থানীয় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল ৷ পরিবারের অভিযোগ, ছুটির পরেও নাবালিকাকে ছবি আঁকানোর নামে আটকে রাখে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক ৷ অন্য সব ছাত্রীরা চলে যাওয়ার পর তাকে একলা পেয়ে ধর্ষণ করে ৷
আরও পড়ুন: নাবালিকাকে নির্যাতনের পর পুলিশি অভিযোগ প্রত্যাহারের চাপ, বহিষ্কার তৃণমূল নেতা
নাবালিকা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে খানিকটা দেরিতেই বাড়ি ফেরে ৷ সে অসুস্থ বোধ করে ৷ কাঁদতে কাঁদতে তার মা-বাবাকে পুরো ঘটনা খুলে বলে ৷ এরপর বাড়ির লোকজন অভিযুক্ত গৃহশিক্ষকের খোঁজে তার বাড়িতে যায় ৷ চ্যাঁচামেচিতে এলাকার মানুষ জড়ো হয় ৷ নাবালিকার পরিবার এবং স্থানীয়রা কেশপুর থানায় অভিযোগ জানায় ৷
নির্যাতিত নাবালিকাকে প্রথমে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ পুলিশি তৎপরতায় সেখানে তাকে পর্যবেক্ষণ করার পরেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় ৷ অভিযোগ, বুধবার দুপুর নাগাদ তারা অসুস্থ মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে ৷ কিন্তু মহিলা পুলিশ না-থাকায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমাতে মেয়েটির চিকিৎসা শুরু হয়নি ৷ এরপর দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও মহিলা পুলিশের দেখা মেলেনি ৷
সংবাদমাধ্যমে খবর পৌঁছে যায় ৷ পাশাপাশি পুলিশ সুপারের কাছেও খবর যায় ৷ বিষয়টি জানার পরেই কোতোয়ালি থানার পুলিশ যায় হাসপাতালে ৷ দীর্ঘ আট ঘণ্টা অপেক্ষার পর রাত দশটা নাগাদ নাবালিকার চিকিৎসা শুরু হয় ৷ অন্যদিকে, এই ঘটনায় পরিবার এবং স্থানীয়রা অভিযুক্ত শিক্ষকের উপর চড়াও হয় বলে জানা গিয়েছে ৷ পরে কেশপুর থানার পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে ৷ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক স্থানীয় তৃণমূল নেতার ভাই এবং সে নিজেও সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ৷
নির্যাতিতা নাবালিকার আইনজীবী জানান, থানায় অভিযোগ করা হয়েছে ৷ পকসো ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে ৷ নির্যাতিতা নাবালিকাকে হাসপাতালে ভরতি করানোটা পুলিশের কাজ ৷ কিন্তু চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হল। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হওয়ার অভিযোগে প্রয়োজনে তারা মেদিনীপুর আদালতে যেতে পারেন ৷ এমনকী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ৷
আরও পড়ুন: নাবালিকা ধর্ষণ ও যুবকের মৃত্যু ! পুলিশিহানার আতঙ্কে ঘর ছাড়া গ্রামবাসীরা
উল্লেখ্য, পুলিশ তৎপরতা দেখানোর সঙ্গে সঙ্গেই মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে নাবালিকা চিকিৎসার শুরু হয় । যদিও এই নিয়ে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। অন্যদিকে, এই ঘটনায় মুখে কুলুপ শাসকদলের। তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।