মেদিনীপুর, 11 জুন : দীর্ঘ লকডাউনে গৃহবন্দী ও দুস্থ মানুষের হাতে চাল, ডাল, সবজি তুলে দিচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। প্রতিদিনই তিনি খাদ্যসামগ্রী ও অর্থসাহায্য করছেন । পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । যার ফলে প্রতিদিন হাজারে হাজারে পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরছে । কোরোনার সংক্রমণও বাড়ছে জেলায় । তাছাড়া আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার বেশ কিছু বাড়ি-ঘর। এই অবস্থায় একহাতে দুষ্কৃতী দমন, পুলিশ প্রশাসনের কাজ চালানোর পাশাপাশি গৃহবন্দী মানুষদের সাহায্য করে চলছে মেদিনীপুরের পুলিশ।
মেদিনীপুরের পুলিশ কয়েকটি ফোন নম্বর জেলায় ঘোষণা করেছে । যে নম্বরগুলিতে ফোন করলেই দুস্থ মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে যাচ্ছে চটজলদি। এছাড়াও অন্য বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খবর পেয়েও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। এরকমই শহরের দুজন দুস্থ মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন তিনি ।
মেদিনীপুর শহরের তোলাপাড়া এলাকায় স্বামীহারা রূপা গাঙ্গুলি নামে এক মহিলা লোকের বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। কিন্তু কোরোনা আতঙ্কে এখন সেই কাজ বন্ধ। পাশাপাশি সুপার সাইক্লোনে উড়ে গেছে তাঁর বাড়ির কিছু অংশ। এই অবস্থায় পুলিশ সুপারের কাছে দ্বারস্থ হন তিনি ।সেই আবেদনের সাড়া দিয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন পুলিশ সুপার। অন্যদিকে বৃদ্ধ পরমানন্দ দাস কাজ হারিয়েই গৃহবন্দী দীর্ঘ তিন মাস। অভুক্ত থাকার পর পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি জানাতে রাতেই পৌঁছে গেল চাল-ডাল, সোয়াবিন, তেল, মশলাপাতি।
এইভাবে শহর এবং জেলার আনাচে-কানাচে যখনই খবর পাচ্ছেন তখনই তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করে চলেছেন পুলিশ সুপার নিজে। এই বিষয়ে রূপা গাঙ্গুলি বলেন, পুলিশ যেভাবে তাদের সাহায্য করেছে তা সত্যিই অভূতপূর্ব। এই অসময়ে চাল, ডাল পেয়ে অনেকটা আমাদের উপকার হয়েছে ।একই কথা জানিয়েছেন পরমানন্দ দাস। তিনি বলেন, এই চাল ডাল এবং মশলাপাতি পেয়ে এই সংকটের সময় আমাদের খুব উপকার হয়েছে। বার বার বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করে কোনো সাহায্য পায়নি। পরে পুলিশ এসে সাহায্য করে গেছে।
যদিও পুলিশ সুপার জানান, “গরিব মানুষের সাহায্য করার জন্য তাদের পুলিশ প্রশাসন সদা জাগ্রত রয়েছে। এই সংকটের সময় আমাদের পুলিশকর্মীরা নিজেদের বেতনের টাকা থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করেছে। তাছাড়া যখনই যেভাবে ফোন বা ম্যাসেজ পাই দুস্থ মানুষের কাছে আমরা এগিয়ে আসি। উল্লেখ্য এর আগেও এক প্রসূতি মহিলার বাড়ি যাওয়ার কাতর আবেদনে সাড়া দিয়ে তিনি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছিলেন। তার বাড়ি কেশপুরে পৌঁছে দিয়েছিলেন এক ফোনে খবর পেয়েই।”