মেদিনীপুর, 23 অক্টোবর : লকডাউনের জেরে শাড়ির ব্যবসা লাটে উঠেছে ৷ তবে সংসার তো চালাতেই হবে ৷ তাই বাধ্য হয়েই পেশা বদল করলেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা শ্বেতা চৌধুরী । টোটো নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শহরে ৷ যাত্রীদের পৌঁছে দিচ্ছেন গন্তব্যে ৷ স্ত্রীর কাজে গর্বিত স্বামী সুতনু চৌধুরী । বললেন, "সমাজের সব মহিলা ওকে দেখে উৎসাহ পাবেন ।"
মাধ্যমিক পাশ পুরুলিয়ায় ৷ বিবাহসূত্রে 23 বছর আগে এজেলায় আসেন শ্বেতা ৷ সংসার চালাতে আর্থিক অনটনের মুখোমুখি হয়ে স্বামীর সঙ্গে শাড়ি-জামা-কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন খাপ্রেল বাজারের বাসিন্দা শ্বেতা । বছর সাতেক তাঁর শাড়ির ব্যবসা ভালই চলেছে ৷ বাড়িতে স্বামী স্ত্রী ছাড়া আছে পোষা টিয়াপাখি, একটি কুকুর ও পায়রা । টেনেটুনে ভালই কেটে যাচ্ছিল সংসার ৷ কিন্তু সুখ স্থায়ী হল না ।
শ্বেতা জানান, মহাজনদের খপ্পরে পড়ে 14 লক্ষ টাকার লোকসান হয় ৷ তার উপর শুরু হয় লকডাউন ৷ একে একে বাড়ির সমস্ত জিনিস বিক্রি করা শুরু হয় সংসারের দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে গিয়ে । বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলের সাহায্যে কোনও ক্রমে চলতে থাকে । কিন্তু লকডাউনে বাড়তে থাকায় একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হয় ৷ তখনই স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করে টোটো কেনার সিদ্ধান্ত নেন ৷ গয়না বিক্রি করে 1 লক্ষ 15 হাজার টাকা জোগাড় করে কেনেন টোটোটি । তারপরই শুরু নতুন পথচলা ৷ অখন সারাদিনে 300 থেকে 600 টাকা রোজগার করেন শ্বেতা ।
শুরুতেই অবশ্য কাজটা সহজ ছিল না । শ্বেতা যখন টোটো চালাতে শুরু করতে যাচ্ছেন তখন নতুন করে মেদিনীপুর শহরে টোটো নামানোর অনুমতি ছিল না ৷ তবে শহরের বেশ কিছু মানুষের সহযোগিতায় তা সম্ভব হয় ৷