চন্দ্রকোনার সভা থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ নওশাদের চন্দ্রকোনা, 16 এপ্রিল: "মাসে 500 টাকা দিয়ে আপনাদের ভুলিয়ে দিয়ে তারা 50 কোটি লুঠ করছে । মাকে 500 দিচ্ছে ৷ সেই মায়ের ছেলেকে 10 লক্ষ ঘুষ দিয়ে চাকরি কিনতে হচ্ছে । মায়ের ছেলে যাতে মদ্যপ তৈরি হয় ৷ তাই দুয়ারে মদ প্রকল্প চালু করেছে । পাঁচশো-হাজারে ভুলে গেলে হবে না ৷ মায়েদের বলব আওয়াজ তুলুন আপনার ছেলের ভবিষ্যতের জন্য ।" শাসকদলকে বিঁধে এমনটাই বললেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী । চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুরে দলীয় কর্মিসভায় শনিবার যোগ দেন তিনি ৷ সেখান থেকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মহিলা ভোটার টানতে এবং রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পকে সামনে রেখে মমতা সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন নওশাদ ।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা-2 ব্লকের ভগবন্তপুর-1 গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর ফুটবল মাঠে আইএসএফের কর্মী সমাবেশে উপস্থিত হন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী । পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হলেও তাকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি তুঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের । এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে আইএসএফও মাঠে নেমে পড়ল ৷ তারা মাঠে নেমে লড়াই করবে, তার আভাস পাওয়া গেল শনিবার চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুরের কর্মী সমাবেশ থেকে । সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটাররা শাসকদলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় সেখানে পরাজয় হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের । তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে । সাগরদিঘির হারে নওশাদ সিদ্দিকীর গ্রেফতারি একটা কারণ বলে মনে করা হয়েছিল । এবার শাসকদলের সেই সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসাতে ময়দানে নেমেছে আইএসএফের বিধায়ক ৷ এমনই মত রাজনৈতিক মহলের ।
শনিবার কৃষ্ণপুরের যে এলাকায় আইএসএফের সভা হয়েছে, তাও তাৎপর্যপূর্ণ । কারণ সংখ্যালঘুদের সংখ্যা বেশি রয়েছে ওই এলাকায় । তবে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের সংখ্যালঘু ভোটারে ভাঙন ধরাতে ও আইএসএফের ঘাঁটি শক্ত করতে এই জনসভা ? প্রশ্ন উঠছে ৷ এদিন কৃষ্ণপুরে আইএসএফের কর্মী সমাবেশ মঞ্চে দেখা যায় কয়েকজন সিপিআইএম নেতাকেও । মঞ্চ থেকে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে একাধিক বার্তা যেমন দিয়েছেন নওশাদ ৷ পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে তৃণমূল সরকারকে তুলোধোনাও করেছেন তিনি । এইদিন নওশাদ সিদ্দিকী মঞ্চ থেকে পঞ্চায়েত ভোটে বাড়ির মা বোনেদের আওয়াজ তোলার বার্তা দেন । লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের 500 টাকা পেয়ে নিজের বাড়ির ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট না করার আহ্বান জানান তিনি ।
শনিবারের সমাবেশে দলের কর্মীদের আসতে দেওয়া হয়নি ৷ বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাধা দেওয়া ও কয়েকজন আইএসএফ কর্মীকে মারধর করেছে শাসকদলের লোকজন ৷ মঞ্চে এমনও অভিযোগ করেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী । এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দিতেও শোনা যায় তাঁকে । তবে তৃণমূলের গড় হিসাবে পরিচিত চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুরে নওশাদ সিদ্দিকীর কর্মী সমাবেশকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বরা । মঞ্চ থেকে নওশাদের তোলা যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা বলে অস্বীকার করা করেছে শাসকদলের তরফে । রাজ্যে গণতন্ত্র না থাকলে কী আর ভাঙড় থেকে এসে চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুরে সভা করা যেত ? পালটা প্রশ্ন ভগবন্তপুর-1 অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের কনভেনার আসানউল্লাহ মণ্ডলের ।
আরও পড়ুন:নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই বিধায়কের নেতৃত্বে দেওয়াল দখল বিজেপির