মেদিনীপুর, 6 জুন :2008 সাল থেকে তিনি তাঁর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন ৷ কিন্তু একবারও তিনি জয়ী হননি ৷ প্রতিবারই শাসক দলের কাছে পরাজিত হয়েছেন। এ জন্য তিনি থেমে থাকেননি। যতবারই তিনি হেরেছেন ততবারই তিনি ওয়ার্ডের মানুষের বিপদে-আপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর নার নাম অনয় মাইতি ৷ বয়স 50 বছর। তিনি অভিনবভাবে 50তম জন্মদিন পালন করলেন (Independent candidate help to people his 50th birthday celebration) ৷
মেদিনীপুর শহরে আগে যে 6 নম্বর ওয়ার্ড ছিল বর্তমানে (9 নম্বর) ওয়ার্ড নামে পরিচিত এই ওয়ার্ডে বিগত প্রায় কুড়ি বছর ধরে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই বছর পঞ্চাশের অনয়বাবু। বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন। কখনও কারোর বর্ষায় ঘর ভেঙে গেলে যেমন সাহায্য পৌঁছে দিয়েছেন তেমনই কেউ দারিদ্রের কারণে পড়াশোনা না করতে পারলে তাকে টেস্ট পেপার খাতা, বই-পেন কিনে দিয়েছেন ৷ আবার মানুষ বিপদে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স নিজে চালিয়ে নিয়ে গিয়ে সেই মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে পৌছে দিয়েছেন হাসপাতালে।
আরও পড়ুন :মায়ের স্বপ্নপূরণে চিকিৎসক হতে চায় অনাথ আশ্রমের মাধ্যমিকে কৃতী ছাত্রী
করোনা পরিস্থিতির সময় 24 ঘণ্টা অনয়বাবু থেকেছেন ওয়ার্ডবাসীর পাশে। রাতদিন এক করে যেমন মাস্ক পৌঁছে দিয়েছেন তেমনই হাতে-হাতে স্যানিটাইজার দিয়েছেন মানুষকে। এছাড়াও শুকনো খাবার, চাল, ডাল, বিস্কুট, তেল, সয়াবিন পৌঁছে দিয়েছেন দুস্থ, গরীব মানুষের বাড়ি-বাড়ি। পাশাপাশি পাশে দাঁড়িয়েছেন পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিকদেরও। নিজেই নর্দমায় নেমে নালা পরিষ্কার করে উদ্ধার করেছেন এলাকার মানুষকে।
বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের সঙ্গে অভিনব জন্মদিন পালন করলেন অনয়বাবু তাঁর এইবারের জন্মদিন আর পঞ্চাশটা মানুষের মতন বিলাসবহুলভাবে পালন করলেন না তিনি। নিজের জন্মদিন পালন করলেন 'স্পেশাল' মানুষদের সঙ্গে। এই বছর 5 জুন ছিল তাঁর 50তম জন্মদিন ৷ জন্মদিনের সন্ধ্যা উদযাপন করলেন মেদিনীপুর শহরের বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের সঙ্গে ৷ এইদিন তিনি মেদিনীপুর পৌরসভার 25 টি ওয়ার্ডের মানুষের জন্য একটি বিনামূল্যে শববাহী গাড়ি দান করেন। এছাড়াও ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বিকাশের পরিবারে তিনি হাজির হয়ে সেখানে থাকা শিশু, মহিলা, বিশেষভাবে সক্ষমদের হুইলচেয়ার, বাইসাইকেল দেন ও তাঁদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন ৷
আরও পড়ুন :মাঠের কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করে বাজিমাৎ বাঁকুড়ার ছেলের
তিনি বলেন, "আর পাঁচটা মানুষের মতো জন্মদিন পালন করার ইচ্ছে আমার ছিল না। সাধারণ মানুষের ভাবনায় আমাকে প্রতিবার ভাবিয়ে তোলে। তাই ওনাদের পাশে থাকা। আর তাই এই বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের নিয়ে জন্মদিন পালন করলাম। ওনাদের হাতে এই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলে দিতে পেরে আমি খুশি।"