মেদিনীপুর, 14 ডিসেম্বর: শখের আর্ট গ্যালারি । স্বাস্থ্যকর্মী সুজিত কুমার দাস তার নিজের বাড়িতেই 600 স্কোয়্যার ফুটের ঘরে গড়ে তুলেছেন এই আর্ট গ্যালারি । মাইথোলজি, লোকশিল্পী এবং পরিবেশের ছবি নজর কাড়ছে তাঁর এই গ্যালারিতে ৷ প্রায় তিনশোরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তাঁর ৷ ছবি দেখলে আঁকার অনুপ্রেরণা বাড়ে, তাই তিনি আঁকা শেখানোর ঘরেই নিজের ও তাঁর ছাত্রী-ছাত্রীদের ছবির গ্যালারি তৈরি করেছেন ৷
তিনি নিজে একজন স্বাস্থ্যকর্মী । পোস্টিং রয়েছেন মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই রুরাল হাসপাতালে । বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও ছেলে । অবসর সময়ে ছবি আঁকা ও তা শেখানোর কাজ করেন সুজিতবাবু ৷ ছবি আঁকার নেশাতেই আর্ট গ্যালারি বানিয়ে ফেলেছেন । সেখানে তাঁর ছবিতে লাইটিংয়ের মাধ্যমেও ফুটিয়ে তুলেছেন এক অদ্ভুত সৌন্দর্য ।
শুধু তাই নয়, সুজিতবাবু পুজোর সময় নতুনত্ব দুর্গা প্রতিমা করেন ৷ ছবি আঁকার তাগিদে জেলার পাশাপাশি ভিন রাজ্য এবং দেশে দৌড়ে যান । এরই সঙ্গে তিনি পোর্ট্রেট, ল্যান্ডস্কেপ, অয়েল ও ক্যানভাস ছবি আঁকাও শেখান । প্রায় শতাধিক ডিজাইনের পেইন্টিং তার এই আর্ট গ্যালারিতে শোভা বাড়িয়েছে । চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ করার পরই রাতে বাড়ি ফিরে এই গ্যালারিতে সময় দেন ৷ আর ছুটির দিনে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন তাঁর ছাত্রছাত্রীদের ৷ তার একটাই স্বপ্ন, ছবি এঁকে যেন স্বাবলম্বী হতে পারে তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা ।
ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "সকালবেলা উঠে বাসে করে চলে যাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে । এরপর সন্ধ্যে নাগাদ বাড়ি আসি । তারপর ছাত্র-ছাত্রীদের শেখানো এবং সঙ্গে নিজের শখের আর্ট গ্যালারি গড়ে তোলা । এই ধরনের গ্যালারি মেদিনীপুর জেলায় কোথাও নেই বলে আমার মনে হয় । আমি ছাত্র-ছাত্রীদের মাইথোলজি এবং লোকশিল্পীদের ওপর ছবি আঁকার উপরই বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছি । ইচ্ছে রয়েছে এই আর্ট গ্যালারিতে যেমন আমার পড়ুয়াদের শিক্ষা দেব, ঠিক তেমনই যাতে তারা এই আঁকার উপর ভিত্তি করে স্বাবলম্বী হতে পারে সেই চেষ্টা করে যাব ।"
শিখতে আসা উৎসাহীদের মধ্যে বিশাল, তনুশ্রী, মধুমিতা, সেলিনা ও আলমরা বলে,"স্যার আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষা দেন । আমরা তাঁর হাত ধরে আজ আঁকতে পারছি । শুধু আঁকা নয়, সেই বিষয়ে সম্যক ধারণা বা বিষয়ের উপর জ্ঞানও দিয়ে থাকেন স্যার ৷ মূলত মাইথোলজি এবং লোকশিল্পীদের উপরই আমাদের বেশি ছবি আছে । আমরা দীর্ঘ কয়েকবছর যাবৎ ছবি আঁকা শিখছি এবং বিভিন্ন জায়গায় অংশ নিচ্ছি ।"