ঝাড়গ্রাম, 25 ফেব্রুয়ারি: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর শেষ বয়সে ছবি আঁকা বা লেখালেখি বন্ধ করে দিয়েছিলেন ৷ বদলে শুকনো গাছের শিকড়, ডাবের খোল, শুকনো তালের আঁটি, গাছের ডাল দিয়ে পশু-পাখির নানা আকৃতি তৈরি করতেন ৷ আর সেটা তৈরি হত পশু-পাখির আকারকে অবিকৃত রেখেই ৷ তিনি এই শিল্পের নাম দিয়েছিলেন, ‘কুটুম-কাটুম’ ৷ আর এই শিল্পকে কেন্দ্র করেই ক্রমশ স্বনির্ভর হচ্ছে ঝাড়গ্রামের খোয়াব গাঁ ৷ এলাকার লোধা গোষ্ঠীর 13টি পরিবারের সদস্যরা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ৷ আর তাঁদের তৈরি ‘কুটুম-কাটুম’-এর চাহিদা এখন রাজ্য ও দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও (Handcraft Kutum-Katum Kept Alive by Shoilpik) ৷ তাদের সংগ্রহশালার নাম ‘শৈল্পিক’ ৷
শহুরে জীবনের থেকে শত হস্ত দূরে খোয়াব গাঁ এর বাসিন্দারা ৷ চাষবাস তাঁদের মূল পেশা ৷ তবে, অবসর সময়ে ‘কুটুম-কাটুম’ তৈরি করেন গ্রামের লোকজন ৷ সেখান থেকে মোটের উপর ভালোই আয় হয় ৷ তবে, এই বদল একদিনে আসেনি ৷ 2018 সালের পর খোয়াব গাঁ নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করে ৷ চালচিত্র অ্যাকাডেমির মৃণাল কুমার মণ্ডল এই গ্রামে আসেন ৷ সেখানকার মানুষদের দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ করান ৷ কিন্তু, বাহিক্য এবং আর্টিফিশিয়াল জিনিস দিয়ে কোনও কিছু তৈরি করা গ্রামের মানুষদের জন্য সহজ ছিল না ৷ তার জন্য প্রয়োজন ছিল প্রশিক্ষণের ৷
তাই মৃণাল মণ্ডল তাঁদের প্রাকৃতিক উপাদান যেমন, শুকনো গাছের শিকড়, ডাবের খোল, শুকনো তালের আঁটি, গাছের ডাল দিয়ে বিভিন্ন রূপ ফুটিয়ে তুলতে উৎসাহ দেন ৷ দেখা যায়, তাঁরা অনেক সহজে সেই কাজটি করে ফেলছেন ৷ সেই সব প্রাকৃতিক জিনিসের আকৃতিতে কোনও বদল না-ঘটিয়ে, নানা জীবজন্তু, মানুষ ও নানান জিনিসের রূপদান করা হয় ৷ মৃণাল মণ্ডলের এই ভাবনা এসেছিল অবন ঠাকুরের ‘কুটুম-কাটুম’ থেকে ৷