মেদিনীপুর, 17 অগস্ট : পরাধীন ভারতে অবিভক্ত মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা সাহিত্যিক এবং শিক্ষক ছিলেন ঋষি রাজনারায়ণ বসু (Rishi Rajnarayan Bose) ৷ বলা হয় ব্রাহ্ম মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি ৷ সেই সময়ে গোটা ভারতবর্ষে সামাজিক শিক্ষা এবং রীতিনীতির প্রচারের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন ৷ রাজনারায়ণ বসু 1851-1866 সাল, ষোলো বছর মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল (Medinipur Collegiate School), তৎকালীন জেলা গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ৷ সেই সময় স্কুলের পাশেই একটি বাড়িতে থাকতেন ঋষি রাজনারায়ণ বসু ৷ কথিত আছে ওই বাড়িতে বাংলার বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী থেকে শুরু করে, সাহিত্যিক এবং মনীষীরা আসতেন ৷ যাঁদের মধ্যে অন্যতম, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্র বসু, বিপ্লবী কানাইলাল দত্ত এবং রাজনারায়ণ বসুর নাতি ঋষি অরবিন্দ ঘোষ ৷ ভারত তথা বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী ঋষি রাজনারায়ণ বসুর সেই বাড়ি আজ হানাবাড়ির চেহারা নিয়েছে ৷ চারিদিকে জঙ্গল, সাপ এবং মাতালদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে বাড়িটি ৷ চুরি হয়ে গিয়েছে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত বহু সামগ্রী ৷ রীতিমত ভগ্নদশা ওই বাড়ির ৷
আর এই বেহাল পরিস্থিতির কারণ, মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল এবং মেদিনীপুর কলেজ (Medinipur College) কর্তৃপক্ষের মধ্যে ওই বাড়িটির অধিকার নিয়ে চলা মামলা ৷ শোনা যায় 1873 সালে মেদিনীপুর কলেজ তৈরি হওয়ার পর, স্কুলের প্রধান শিক্ষককেই কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৷ সেই সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষকই ওই বাড়িটিতে থাকতেন ৷ পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ ভারত থেকে এক অধ্যাপককে কলেজের অধ্যক্ষ করে আনে সরকার ৷ তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষকে ওই বাড়িতে সাময়িকভাবে থাকতে দিয়েছিল ৷ এমনই দাবি করেছেন স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা হিমানী পড়িয়া ৷ সেই সময় থেকেই কলেজের অধ্যক্ষরা বছরের পর বছর সেখানে থাকতে শুরু করেন ৷ সেই প্রমাণপত্রও স্কুলের কাছে আছে বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষিকা ৷ তিনি অভিযোগ করেছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষই একটা সময় লোকমুখে ওই বাড়িটিকে প্রিন্সিপাল কোয়ার্টার নামে প্রচার করতে শুরু করে ৷ পরবর্তী সময়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই বাড়ির উপর নিজেদের অধিকার দাবি করলে, তা মানতে চায় না মেদিনীপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ ৷