খড়গপুর, 12 জুন : মর্নিং ওয়াক সেরে চা-চক্রে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাওড়ার ঘটনায় বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগের দাবি করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh suspect foreign militant group involvement in Howrah incident)।
এদিন সকাল সকাল খড়গপুর শহরে মর্নিং ওয়াক সেরে চা-চক্রে যোগ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ । সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বেশ কিছু প্রসঙ্গে মুখ খোলেন তিনি । হাওড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, "এর আগেও কৃষক আন্দোলন, সিএএ এবং এনআরসি-র সময় দেখেছি আমরা খালিস্তানি যোগ, তাই এই ঘটনায় বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি । এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সজাগ রয়েছে এবং তারা কঠোর ব্যবস্থা নেবে ।"
আরও পড়ুন :হজরত মহম্মদের অপমানের প্রতিবাদে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতায় বিপর্যস্ত হাওড়ার জনজীবন
এরপর মুর্শিদাবাদে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যখন কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তখন এখান থেকে বহু নেতা-নেত্রী চিৎকার চেঁচামেচি করছিলেন, পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তাহলে আপনারা কেন বন্ধ করেছেন? কেননা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না তাই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে । যাতে এই রকমের দুষ্কৃতীরা রাস্তায় বেরিয়ে উৎপাত করতে না পারে তার জন্য পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ৷ পুলিশ কিন্তু সেই কাজ করছে না ৷"
কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে তিনি জানান, মানুষকে তো আর মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবা উচিত যে পশ্চিমবাংলাকে ভারতবর্ষের সঙ্গে রাখতে গেলে হয়তো কেন্দ্রীয় বাহিনী বা সেনা দিয়েই করতে হবে ।
এই অশান্তির ঘটনায় পুলিশে রদবদল নিয়ে তিনি জানান, এটা তো মমতা বন্দ্যােপাধ্যায় মানষের আই ওয়াশ করছে । তিনি কিছু করতে পারেন না শুধু কিছু পুলিশ অফিসারকে ট্রান্সফার করে দেন । যেখানে পাঠিয়েছেন সেখানে গোলমাল হলে আবার সেখান থেকে এখানে পাঠিয়ে দেবেন । পুলিশ তো তার কাজ করার চেষ্টা করে বা করতে চায় । কিন্তু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পুলিশকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রাখা হয়েছে । এখানে তাই এত উৎপাত বাড়ছে, খুন-জখম-ধর্ষণ বাড়ছে । পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে । পুলিশ নিজের থেকে কিছু করে না কারণ তাদেরও মার খাওয়ার ভয় আছে । সরকার চায় না এগুলো বন্ধ হোক, কারণ এরাই এদের ভোট জেতায় ।
রাজ্য সরকারের একাধিক ইস্যু নিয়ে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের আরও পড়ুন :নূপুরদের তিহাড় জেলে পাঠানোর দাবি ক্ষুব্ধ মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সোনিয়া গান্ধির দেখা প্রসঙ্গে জানান, রাজ্যসভার ভোট হয়ে গেল আপনারা দেখলেন বিজেপি ড্যাং ড্যাং করে জিতে বেরিয়ে গেল ৷ বিরোধী দলগুলোর কী অবস্থা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিপিআইএম-এর হরিজিৎ সিং-সুরজিৎ এর ভূত চেপেছে ৷ সিপিএম যখন এখানে ক্ষমতায় ছিল সকাল থেকে উনি উঠে এদিক ওদিক ঘুরে তৃতীয়, চতুর্থ ফ্রন্ট বানানোর চিন্তা করতেন ৷ এই করতে করতে সিপিএম পার্টিটাই উঠে গিয়েছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জীবনে হতে পারবে না ৷ আপনি বাংলাটাকে সামলান না হলে এটাও হাতের বাইরে চলে যাবে ।
যদিও এরপরে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, শুনলাম খড়গপুর, মেদিনীপুরেও বাইরের থেকে লোক নিয়ে এসে ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা চলছে ৷ আর এটা যদি হয় তাহলে বিজেপি চুপ করে বসে থাকবে না, রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ ও প্রয়োজনে প্রতিরোধ করবে ।