বেলদা, 24 সেপ্টেম্বর: একসময় জমিদারি পুজোর সুবাদে কামান দেগে জাঁকজমকভাবে দুর্গাপুজো হত দেব পরিবারে ৷ কিন্তু কালের গর্ভে জাঁকজমক হারানোই পরবর্তী প্রজন্ম ঘট পুজো করে কোনওক্রমে ঐতিহ্যের এই দুর্গাপুজো চালিয়ে যাচ্ছেন । সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি মন্দির সংরক্ষণে সরকার সাহায্য করুক এমনই দাবি পরিবারের (Dev family Durga puja of Kushmuri) । তবে পুজোর দিনগুলিতে পরিবারের সদস্যরা ভিন দেশ থেকেও ফিরে এসে এই দুর্গাপুজোতে অংশ নেন ।
নেই কামানের শব্দ । হাতিশালায় হাতি আর ঘোড়াশালায় ঘোড়াও নেই আর । বেলদা থানার কুশমুড়ির দেব পরিবারের পুজোর উৎসবে কাছাড়ি বাড়ির প্রাঙ্গণে আর বাজে না নহবৎ। তবু দুর্গাপুজাে এলে অতীতের সেই ঐতিহ্য ফিরে আসে ঢাক-কাঁসর-ঘণ্টা এবং শঙ্খধ্বনিতে।
আরও পড়ুন:দেবীর আবাহনে নারীশক্তি, মহিলা বাদ্যশিল্পীরাই সূচনা করলেন দুর্গাপুজোর
শতবর্ষ প্রাচীন দেব পরিবারের দুর্গাপুজােয় এখন আর দেবী দশভূজার মূর্তি গড়া হয় না । ঘট বসিয়েই দেবী দুর্গার আরাধনা হয় । জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের সঙ্গে সঙ্গে কাছারিবাড়ির জৌলুস কমলেও ঐতিহ্য রক্ষায় দেব পরিবারের বর্তমান উত্তরসূরিরা আপ্রাণ প্রয়াসী । এই কাছারিবাড়ি এখন পোড়া বাড়িতে পরিণত হয়েছে । দেব পরিবারে বাড়িতে ঢোকার মুখেই এখনও রয়েছে প্রায় ভঙ্গুর, তৎকালীন সেই প্রাচীন ঐতিহ্যশালী একটি তোরণ । যার সামনে একসময় ঘোড়ায় ও হাতির পিঠে চড়ে তৎকালীন রাজা ও ইংরেজরা আসতেন রাজবাড়িতে ।
জানা যায়, প্রায় দেড়শো বছর আগে বিহারের রাজপুতদের একজন গুরুপ্রসাদ দেব কুশমুড়ি এলাকায় সুদের ব্যবসা করতে আসেন । উদায়স্ত ঋণ ব্যবস্থা ছিল। সূর্যাস্তের পর ঋণ শোধ করতে না পারলেই ঋণ গ্রহীতার জমি দখল করে নিতেন ঋণ দাতা । এভাবেই পুরনো বেলদা 1 নং গ্রাম পঞ্চায়েতের কুশমুড়িতে দেব পরিবারের প্রতিষ্ঠা করেন । এই পরিবারের দুই সন্তান রাধামোহন দেব এবং গোলকমোহন দেব । এরাই তদানীন্তন রাজার কাছ থেকে চৌধুরী উপাধি লাভ করেন । চৌধুরী রাধামোহন দেব এবং চৌধুরী গোলকমোহন দেব, পরিবারের কুলদেবতা ব্রজরাজ দেব মহাপ্রভুর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ৷