দাসপুর, 12 ডিসেম্বর: জীবিত থেকেও মৃত । তাই হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আসা । নিজেকে 'জীবিত' প্রমাণ করতে আদালত থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন গৃহবধূ ।
সরকারি খাতায় মৃত ৷ তাই জুন মাস থেকে মেলেনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা । দাসপুর 2 নম্বর ব্লকের খেপুত গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণবাড় গ্রামের বছর 35-এর পূর্ণিমা বারিকের এমনই অবস্থা । দারিদ্রতার সংসারে পরিবার বলতে স্বামী ও দুই কন্যাসন্তান ৷ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় মেয়েদের টিউশনের মাইনে মেটাতেন পূর্ণিমা । কিন্তু হঠাৎ করেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায় ৷
প্রথমে বুঝতে পারেননি কেন টাকা আসা বন্ধ হয়ে গেল ৷ ব্লক প্রশাসনের কাছে একাধিকবার গিয়ে শেষমেষ জানতে পারেন তিনি তাদের খাতায় কলমে 'মৃত'। তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার । এই ঘটনা জানতে পেরে ভেঙে পড়েন পূর্ণিমা ৷ এরপর থেকে নিজেকে 'জীবিত' প্রমাণ করতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে একাধিকবার ঘুরেছেন । কিন্তু তবুও সমস্যার সমাধান হয়নি । কয়েকমাস হন্যে হয়ে ঘুরে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে আদালতের কাছে গিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন পূর্ণিমা । কিন্তু কিভাবে ঘটল এমন ঘটনা ? ব্লক প্রশাসন বলছে, এটা আধার কার্ডের সমস্যা থেকে হয়েছে । মাকে দাহ করার সময় উনি নিজের আধার কার্ড দেওয়াতেই এই সমস্যা ৷
এই বিষয়ে পূর্ণিমা বারিক বলেন,"গত কয়েকমাস ধরে হঠাৎ করে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হয়ে যায় । আমি কিছু বুঝে উঠতে পারিনি । বারবার আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি । ব্লক থেকে জানানো হয় আমি খাতায় কলমে মৃত । আমার মা মারা যাওয়ার পর দাহ করার সময় নিজের আধার কার্ডের জেরক্স দিয়েছিলাম ৷ সেখান থেকে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে বলছে ওরা । কিন্তু তারপরও অভিযোগ জানিয়েও সমাধান হয়নি । আদালতে গিয়ে এফিডেফিট করে আমি যে জীবিত কি না, তার প্রমাণ দিতে হয়েছে । আমার একটাই আবেদন, আমার ন্যায্য পাওনা টাকা যেন আমি পাই তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন ।"
যদিও এই বিষয়ে দাসপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও প্রবীর কুমার শিট বলেন, "বিষয়টি শুনেছি । ওই মহিলার সঙ্গে কথাও বলেছি । বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে । দ্রুত সমস্যার সমাধানে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ।"