চন্দ্রকোণা, 26 জুন : পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা-1 ব্লকের রামজীবনপুর পৌরসভা ৷ পৌর এলাকার 1 থেকে 5 নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকশো তাঁতি পরিবারের ৷ হাতে টানা তাঁতের কল টেনেই শাড়ি তৈরি করেন শিল্পীরা ৷ এই বিদ্যে বাপ-ঠাকুর্দার শেখানো ৷ এতদিন সেই কাজ করেই চলত সংসার ৷ ছবিটা বদলে দিয়েছে করোনা আবহ ৷
শিল্পীরা জানিয়েছেন, মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অথবা সুতো কিনে শাড়ি তৈরি করতেন তাঁরা ৷ তারপর সেই শাড়ি বিক্রি করেই মেটাতেন মহাজনের ঋণ ৷ বাড়তি লাভে ঘুরত সংসারের চাকা ৷ কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না ৷ আসলে কোভিড পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন মহাজনরা ৷ মিলছে না প্রয়োজন মাফিক টাকা ৷ বেড়েছে সুতোর দামও ৷ ফলে অতিরিক্ত টাকায় সুতো কিনে শাড়ি বুনতে পারছেন না তাঁতিরা ৷ এর জেরে কার্যত বন্ধ হওয়ার মুখে এলাকার শতাব্দী প্রাচীন কুটির শিল্প ৷
আরও পড়ুন :ভোট আসে ভোট যায়, সঙ্কটমোচন বহু দূর, ধ্বংসের মুখে শান্তিপুর-ফুলিয়ার তাঁত
স্থানীয় তাঁতিরা জানালেন, তাঁরা বা তাঁদের পূর্বপুরুষরা কোনও দিনই চাষবাস বা বিকল্প কোনও রুজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না ৷ তাই তাঁদের অন্য কোনও কাজ জানা নেই ৷ কিন্তু বর্তমানে এঁদের অনেকেই সংসার চালাতে অচেনা কাজে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন ৷
দুরবস্থার একই ছবি দেখা যাচ্ছে কাঁসা শিল্পেও ৷ পৌর এলাকার 6 নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কিছু ছোট ছোট কারখানা রয়েছে ৷ সেখানে বাসন-সহ অন্য়ান্য সামগ্রী তৈরি করেন কাঁসাশিল্পীরা ৷ করোনার দাপট ও লকডাউনের জেরে ধুঁকছে সেই শিল্পও ৷ শিল্পীরা জানাচ্ছেন, একদিকে মাটির অভাব, অন্যদিকে ক্রমশ নিম্নমুখী চাহিদা পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে ৷ কাজ না পেয়ে কার্যত বেকারত্বে ভুগতে হচ্ছে তাঁদের ৷