খেলার মাঠ না-থাকায় স্কুলকে জমি দান গ্রামবাসীদের চন্দ্রকোনা, 2 মে: একযোগে গ্রামের স্কুলকে জমি দান করে নজির সৃষ্টি করলেন 64 জন গ্রামবাসী। স্কুলেই প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে শিবির করে জমিদাতাদের জমি স্কুলের নামে রেজিষ্ট্রেশন করে দেওয়া হয়। হাসিমুখে 64 জন জমিদাতা গ্রামবাসী রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে স্বাক্ষর করে দেন। এই ঘটনা নজিরবিহীন এবং দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বলেই মত প্রশাসন থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের।
নজিরবিহীন এই দৃষ্টান্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা 1 নম্বর ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুদাসপুর গ্রামের। গ্রামের বসতি 160টির মধ্যে 64 জন গ্রামবাসীই একযোগে তাঁদের অংশের 68 শতক জায়গা গ্রামের বিষ্ণুদাসপুর বিবেকভারতী বিদ্যামন্দির স্কুলকে দান করেছেন। প্রসঙ্গত, বিষ্ণুদাসপুর বিবেকভারতী বিদ্যামন্দির স্কুলটি 1969 সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিষ্ণুদাসপুর গ্রামে। মাধ্যমিক এই স্কুলে 225 জন ছাত্রছাত্রী ও 13 জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। বহু পুরনো প্রত্যন্ত গ্রামের এই স্কুলে এত দিন ছিল না কোনও খেলার মাঠ। যার ফলে সমস্যায় পড়ত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাই নিজেদের জমি স্কুলের হাতে তুলে দিলেন 64 জন গ্রামবাসী।
এই গ্রামবাসীরা স্কুলে রেজিষ্ট্রেশন করতে গিয়েও কোনও রকম যাতায়াত খরচও নেননি বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়। কিন্তু কেন গ্রামের এত সংখ্যক মানুষ স্কুলকে জমি দানের উদ্যোগ নিলেন ? উত্তরে তাঁদের একটাই কথা, গ্রামের স্কুলের উন্নতি ও ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবিবার দুপুরে বিষ্ণুদাসপুর বিবেকভারতী বিদ্যামন্দির (মাধ্যমিক) স্কুলে জমি রেজিষ্ট্রেশন শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রশাসনের তরফে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রকোনা 1 নম্বর ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী। ছিলেন লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শঙ্কর চৌধুরী ও স্কুলের টিআইসি সুশীল কুমার পাঁজা-সহ স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:এক ফালি জমি নিয়ে তোলপাড় বার্নপুর! তৃণমূল-বিজেপির দফায় দফায় বিক্ষোভ
এবিষয়ে ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী জানান, গ্রামের 64 জন মানুষ একত্রিত হয়ে 68 শতক জায়গা স্বেচ্ছায় দান করায় স্কুল উপকৃত হল। আজকের দিনে গরীব মানুষের যেখানে জায়গার এত সংকট সেখানে স্বেচ্ছায় গ্রামের মানুষের স্কুলকে জায়গা দান এক অভিনব উদ্যোগ।
স্কুলের পক্ষ থেকেও জমিদাতা গ্রামবাসীদের এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হয়। জমিদাতা গ্রামবাসী সকলেই কেউ প্রান্তিক চাষি, কেউ আবার মধ্যবিত্ত পরিবারের তা সত্বেও স্কুলের জন্য একসঙ্গে সকলে মিলে জমিদান করায় তা যে নজির সৃষ্টি করল তা বলাই চলে ৷