গোপীবল্লভপুর, 15 জানুয়ারি : প্রতি বছর মকরসংক্রান্তির দিন রীতিমতো সামিয়ানা খাটিয়ে বুলবুল পাখির লড়াইয়ের আসর বসে গোপীবল্লভপুরে। দীর্ঘ ঐতিহ্য রক্ষা হল বৃহস্পতিবারও । ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরে হল বুলবুল পাখির লড়াই। এই লড়াই মূলত দুই পাড়ার সম্মানের লড়াই। বাজার সাই ও দক্ষিণ সাই । যে পাড়ার বুলবুল বেশিবার জেতে, জয় সেই এলাকার।
সামিয়ানা খাটিয়ে বুলবুল পাখির লড়াইয়ের আসর গোপীবল্লভপুরে - গোপীবল্লভপুর
ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরে হল ঐতিহ্যবাহী বুলবুল পাখির লড়াই। বৃহস্পতিবার এই লড়াইয়ে বিজয়ী হল বাজার সাই পাড়া ৷
আরও একটি নিয়ম আছে এই খেলার। যে পাখি হেরে যায় তার ঝুঁটি একটু কেটে উড়িয়ে দেওয়া হয়। আর যে পাখি জেতে, তাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে কিছু দিন রেখে, খাইয়ে, যত্ন করে তারপরে জঙ্গলে ছাড়া হয়। মকর সংক্রান্তির দিন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় হয় মোরগের লড়াই। মোরগের পায়ে বেঁধে দেওয়া ছুরিতে রক্তারক্তিও হয়। কিন্তু গোপীবল্লভপুরে এই সংক্রান্তির দিনে মানুষ যে পাখির লড়াইতে মেতে ওঠেন তাতে কোনও রক্তপাত হয় না । খেলার নিয়ম হল, সকাল থেকে না খাইয়ে রাখতে হয় বুলবুলকে। এরপর খেলার জায়গাতে একটা মঞ্চে রাখা হয় কলার টুকরো। সেই এক টুকরো কলা খাবে বুলবুল, তাও আবার লড়াই। এই খাদ্যের অধিকারের জন্যই যুদ্ধ। খাবারের জন্যই সমুখ সমরে নামে দু’টি বলবুলি পাখি। এদের ঘিরে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দু’টি পাখির লড়াই দেখতে সূদুর ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে আসেন অসংখ্য মানুষ।
আরও পড়ুন : কোরোনা টিকাকরণের নিয়মবিধি, রাজ্যগুলিকে রুলবুক পাঠাল কেন্দ্র
গুপ্ত বৃন্দাবন বলে পরিচিত কয়েকশো বছরের ঐতিহ্যবাহী এই বুলবুলির লড়াই গোপীবল্লভপুর এক নম্বর ব্লকের আদি সংস্কৃতি। মকর সংক্রান্তির দিন গোবিন্দজিউর মন্দিরের সামনে বসে এই বুলবুলির লড়াই। তার আগে প্রায় দু’মাস ধরে এই বুলবুলির লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলে। পাখি ধরা থেকে শুরু করে পাখিকে বেঁধে রেখে লড়াইয়ের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া দু’মাস ধরে চলতে থাকে। এ বারের লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে একশোরও বেশি বুলবুল। গোপীবল্লভপুর এক ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সত্যরঞ্জন বারিক বলেন, “এটা আমাদের এখানে কয়েকশো বছরের পুরনো সংস্কৃতি । এই মকরসংক্রান্তির দিন এই লড়াই দেখতে আসেন বাইরেরও বহু মানুষ। প্রতিটি রাইন্ডে যে পাখি হেরে যায় সেই পাখির মাথার ঝুঁটি কেটে দিয়ে বোঝানো হয় সে বিজিত। আর যে বিজয়ী সেই পাখির মালিককের হাতে তুলে দেওয়া হয় ট্রফি সহ আনুসঙ্গিক নানা পুরস্কার। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সাই পাড়াকে হারিয়ে বাজার সাই পাড়া বিজয়ী হয় । খুশির হাওয়া বাজার সাই পাড়ায় ৷