খড়গপুর, 1 অগস্ট : এক কিশোরকে গুলি করে খুন করে মৃতদেহটি মাটিতে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠল একটি কারখানার এক নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে ৷ ঘটনাটি খড়্গপুর লোকাল থানার কাঁটাপাল গ্রামের ৷
গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শনিবার মাটি খুঁড়ে ওই গুলিবিদ্ধ কিশোরের দেহ উদ্ধার করে খড়্গপুর লোকাল থানার পুলিশ । এই থানার অন্তর্গত গোকুলপুর স্টেশন লাগোয়া কাঁটাপাল এলাকায় এই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে । ঘটনাস্থলটি থেকে গোকুলপুর স্টেশন বাজারের দূরত্ব 200 মিটার । ঘটনাস্থলে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিক ।
কীভাবে ওই কিশোর গুলিবিদ্ধ হল আর কেনই বা তাঁকে রাতারাতি মাটিতে গর্ত করে পুঁতে দেওয়া হল, এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ । ওই ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । শনিবার বেলার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধারের পর পুলিশের অনুমান, গত 24 ঘণ্টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে ওই কিশোর । দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে । বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি পুলিশ । পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টির প্রাথমিক তদন্তের স্তরে রয়েছে ।
আরও পড়ুন : mothers body recovered : দুই শিশু সন্তান-সহ মায়ের দেহ উদ্ধার
ঘটনায় অভিযুক্ত কারখানার নিরাপত্তারক্ষী সুরেন্দ্র নাথ ঠাকুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুর শিল্পতালুকে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে । মাঝে মধ্যেই কারখানাগুলির ভাঙা পাঁচিল টপকে অথবা অরক্ষিত অংশ দিয়ে কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায় কিছু মানুষ । আর সেই কারণে কোনও কোনও বন্ধ কারখানায় গানম্যান বা সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা থাকে । তেমনই কারওর গুলিতে আহত হয়ে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে, এমনই অনুমান করা হচ্ছে ।
জানা গিয়েছে, ওই কিশোরের নাম কাশীনাথ দোলুই, বয়স আনুমানিক 15 বছর । তার বাড়ি কাঁটাপাল গ্রামে । গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন শুক্রবার বিকেল 3টে নাগাদ এলাকায় খবর ছড়িয়েছিল যে 2 জন কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়েছে । কাশীনাথের বাড়ি থেকে ওই বন্ধ কারখানাটির দূরত্ব প্রায় 500 মিটার । গ্রামবাসীরা দেখতে পায় আহত দু'জনকে কয়েকজন মিলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে । এর মধ্যে একজনের পায়ে গুলি লেগেছিল বলে জানিয়েছে তারা । সে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে । কাশীনাথ হয় ঘটনাস্থলে বা কিছুক্ষণ পরে মারা যায় । বিষয়টি জানাজানি হলে বিপদ হতে পারে, এই ভয়ে তাকে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে দেওয়া হয় ।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার তাদের কাছে খবর আসে যে দু'জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে এবং একজনের মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে । কিন্তু ঠিক কোথায় দেহ পোঁতা হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছিল না পুলিশ । পাশাপাশি এলাকায় তীব্র উত্তেজনা থাকায় শুক্রবার সন্ধেয় দেহ উদ্ধারের ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ । শনিবার বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়েই অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধার করে খড়্গপুর লোকাল থানার পুলিশ । যদিও কাশীনাথের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাদের পরিবারের ছেলে চুরি করতে যায়নি, কারখানার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল । নেহাতই সন্দেহের বশে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে । ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় । ঘটনাস্থলে যায় খড়গপুর লোকাল থানার পুলিশবাহিনী ।
