চন্দ্রকোনা, 14 জুন: পঞ্চায়েত ভোটের জন্য নির্বাচনী আচরণ বিধি লাগু রয়েছে ৷ তারই মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানীয় জলের লাইনের নামে সার্ভের কাজ করছে সরকারি কর্মীরা ৷ এমনই অভিযোগ তুলে ব্লকের বিডিওকে লিখিত দেয় বিজেপি ৷ গ্রামে গিয়ে সরকারি কর্মীর প্রকল্পের প্রচারের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় চন্দ্রকোনায় । আর এই খবর জানাজানি হতেই জলের লাইনের সার্ভের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে কর্মীরা ।
ওই এলাকায় বুধবার সকাল থেকে আর ওই সরকারি কর্মীদের দেখা যায়নি ৷ যদিও এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের আরও কঠোর হওয়া উচিত বলে মনে করছে বিরোধীরা ৷ তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, জল জীবন মিশন প্রকল্পের সার্ভের কাজ হচ্ছিল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ তবে এতে গ্রাম পঞ্চায়েতের কোনো কর্মী যুক্ত নেই ৷ জেলা পরিষদ থেকেই এই কাজ করা হয় । বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন ।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দাখিলের কাজ চলছে ৷ লাগু রয়েছে নির্বাচনী আচরণ বিধি । এ সময় সরকারি প্রকল্পের প্রচার বা সরকারি প্রকল্প নিয়ে মানুষের দ্বারস্থ হওয়া নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের সামিল । আর এমনই নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-2 ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে । বিজেপির চন্দ্রকোনা দক্ষিণ মণ্ডলের পক্ষ থেকে গত 11 জুন তারিখে চন্দ্রকোনা-2 ব্লক বিডিওকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ।
পানীয় জলের লাইনের নামে সরকারি প্রকল্পের প্রচারের অভিযোগ আরও পড়ুন:মনোনয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন জুন
বিজেপির তরফে অভিযোগে জানানো হয়, কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত মদনমোহনপুর এলাকায় কিছু সরকারি কর্মচারী বাড়ি বাড়ি গিয়ে জল প্রকল্পের নামে ফর্মফিলাপ করাচ্ছে এবং প্রচার করছে । এই ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়ে বিজেপির তরফে বিডিওকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি বিজেপির তরফে একটি ভিডিয়ো ফুটেজও দেওয়া হয় ৷ যাতে দেখা যায়, একজন যুবক গ্রামের মেঝেতে বসে মহিলাদের থেকে তাদের তথ্য নথিভুক্ত করছে । গ্রামেরই এক ব্যক্তি তাঁর নাম পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কর্মী বলে নিজেকে পরিচয়ও দিচ্ছেন । পাশাপাশি তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, তিনি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে আসছেন । আর এই ঘটনা সামনে আসতেই নির্বাচনের প্রাক্কালে শোরগোল পড়ে যায় চন্দ্রকোনায় ।
উল্লেখ্য, যেই গ্রামে পানীয় জলের লাইনের নামে সরকারি কর্মচারীরা সার্ভে করতে গিয়েছিল বলে বিজেপির অভিযোগ ৷ সেই মদনমোহনপুর গ্রামের বাসিন্দাদের থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পাড়া গিয়েছে, একজন সরকারি কর্মী পরিচয় দিয়ে তাদের গ্রামে গিয়েছিল । তিনি বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের কানেকশন করিয়ে দেওয়া হবে বলে বাসিন্দাদের থেকে নাম, আধার নম্বর ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে । এমনকী বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের কানেকশন পৌঁছে দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের লোগো দেওয়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রচার পত্রও দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন:বিরোধী দলের মনোনয়নপত্র পেশ করা প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা
এ বিষয়ে বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুদীপ কুশারি বলেন, "নির্বাচনী আচরণ বিধি চালু হওয়ার পর কোনো সরকারি প্রকল্পের প্রচার বা সরকারি প্রকল্প নিয়ে কোনো কর্মচারী মানুষের দ্বারস্থ হতে পারেন না । কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এতটাই ভীতসন্ত্রস্ত যে তারা সরকারি কর্মচারীদের ব্যবহার করে ভোট টানার চেষ্টা করছে ৷ সেই জন্য ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় এহেন কাজ করছে ৷" যদিও তৃণমূল পরিচালিত কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্কর ঘোষ বিজেপির তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন । তিনি বলেন, "বিডিওকে লিখিত অভিযোগ কেউ করে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হোক ।"