মেদিনীপুর, 15 অগাস্ট : সময়টা 1931 সাল । তখন থেকেই বাংলা থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করার চেষ্টা শুরু হয়ে যায় জোরকদমে । সেসময় বাংলার মানুষের ওপর ইংরেজদের অত্যাচার পৌঁছেছিল চরম পর্যায় । নির্দিষ্ট করে বলাই যায়, সেসময় সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অংশের বিপ্লবীরা । তাঁদের মধ্যে অন্যতম কয়েকটি নাম ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য, ঋষি অরবিন্দ ঘোষ, মৃগেন দত্ত ।
মেদিনীপুর জেলার বিপ্লবীদেরকে অত্যাচারের মাপকাঠিতে শীর্ষে আসে যে নাম তা হল তৎকালীন জেলাশাসক পেডি । 1930 সালে জেলাশাসক হিসাবে মেদিনীপুরে আসেন পেডি । শুরু হয় অকথ্য অত্যাচার । হিজলি নিবাসে নিরস্ত্র বন্দীদের ওপর গুলি চালানোয় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনিই । এমতবস্থায় জেলার বিপ্লবীরা অত্যাচারী পেডিকে মারার জন্য পরিকল্পনা করেন । 1931 সালের 7 এপ্রিল । মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে প্রদর্শনী চলাকালীন বিপ্লবীরা হত্যা করলেন পেডিকে । তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করলেন বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্ত ও বিপ্লবী জ্যোতিজীবন ঘোষ । শেষ হয় এক অত্যাচারী জেলাশাসকের অধ্যায় ।
পেডির পর জেলাশাসক হয়ে আসেন ডগলাস । অত্যাচারের মাপকাঠিতে যুক্ত হয় আরও একটি নাম । অবস্থার বদল আনতে বিপ্লবীরা প্রকাশ্যে হুমকি দেন, বাংলায় কোনও ইংরেজ জেলাশাসককে জেলাশাসক পদে থাকতে দেওয়া হবে না । এই ঘটনার পর ডগলাস একটু সতর্ক হয়েছিলেন । কিন্তু তাঁর অত্যাচার কমেনি । 1932 সালের 30 এপ্রিল । ডগলাসের পরিণতি হয় সেই পেডিরই মতো । জেলা পরিষদের সভাগৃহে সভা চলাকালীন বিপ্লবী প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য্য ও বিপ্লবী প্রভাংশু পাল প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করলেন ডগলাসকে । পরপর দুই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ইংরেজ মহলে তৈরি হয় আতঙ্কের পরিবেশ । সেসময় ইংরেজদের মধ্যে একটি কথা বহুল প্রচলিত হয় । যা হল, "চিল্ড্রেন স্লিপ স্লিপ, অ্যানাদার এপ্রিল ইজ় কামিং ।"