সহপাঠীকে খুনে গ্রেফতার অভিযুক্ত কিশোর জামুড়িয়া, 31 জুলাই: জামুড়িয়ায় আনন্দ কেশরি নামে এক কিশোরকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার 17 বছরের অভিযুক্ত ৷ ধৃত কিশোর মৃতের সহপাঠী বলে জানিয়েছে পুলিশ ৷ সোমবার তাকে গ্রেফতার করেছে জামুড়িয়া থানার পুলিশ ৷ গ্রেফতারের পরেই সামনে এসেছে খুনের কারণ ৷ যা জেনে হতভম্ব পুলিশও ৷
খুনের কারণ হিসাবে জানা গিয়েছে, বন্ধুদের কথা তথা কুকর্মের নানা ঘটনা পরিবারের কাছে বলে দিত আনন্দ ৷ সেই রাগে আনন্দকে খুন করার ছক কষে তারই বন্ধু 17 বছরের ওই কিশোর। শনিবার নেশা করানোর নামে আনন্দকে ডেকে পাঠিয়েছিল ওই কিশোর ৷ এরপর জামুড়িয়া থানার পিছনে একটি মাঠে ফাঁকা জায়গায় তাকে নিয়ে গিয়ে অতর্কিতে আনন্দের উপরে হামলা চালায় ওই কিশোর। লাঠি দিয়ে আঘাত করায় প্রথমে জ্ঞান হারায় আনন্দ কেশরি। তারপর তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। শুধু তাই নয় মৃত্যু নিশ্চিত করতে, শেষে ভারী পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে ফেলা হয়।
কিশোর বয়সের এই নৃশংসতা দেখে চমকে গেছে পুলিশও। তাঁদের বক্তব্য, ধরা পড়ার পর কোনও অনুশোচনা দেখা যায়নি অভিযুক্ত কিশোরের।পাশাপাশি কীভাবে খুন করেছে অভিযুক্ত কিশোর, ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তাও নাকি, দেখিয়েছে ৷ কিশোর অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে জুভেনাইল কোর্টে পাঠিয়েছে জামুরিয়া থানার পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এলাকার বাসিন্দা অনিতা কেশরির একমাত্র ছেলে ছিল আনন্দ কেশরি। বহু বছর আগে স্বামী ছেড়ে দেওয়ায় অনিতা দেবী তার একমাত্র ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে জামুড়িয়ায় বাপের বাড়িতে থাকতেন। আনন্দ কেশরি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। পড়াশোনার ফাঁকে দোকানে দোকানে চিপস সাপ্লাই করতো সে। শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল দোকানে জিনিস দিতে বলে। আর ফিরে আসেনি। অনেক রাত পর্যন্ত আনন্দ বাড়ি না আসায় রাতেই থানায় গিয়েছিলেন আনন্দের মা অনিতা দেবী। কিন্তু পুলিশ তাঁকে পরামর্শ দেয় রবিবার এসে নিখোঁজের ডায়েরি করতে এবং তার আগে আত্মীয় পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের কাছে একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে ।
আরও পড়ুন: নির্মীয়মান কালভার্ট ভেঙে রায়গড়ে চার শিশু-সহ মৃত 5
রবিবার জামুড়িয়া থানার কাছে একটি অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তার মাথা থ্যাঁতলানো ছিল। শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। থানা থেকে মাত্র 500 মিটার দূরে একটি মাঠের মধ্যে ওই মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু প্রথমে ওই কিশোরের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে লোকমুখে শুনে অনিতাদেবী থানায় যান এবং মৃত কিশোরকে নিজের ছেলে হিসেবে শনাক্ত করেন। পাশাপাশি পুলিশের কাছে নিজের সন্দেহের কথা জানান। পুলিশ সেই মত জামুরিয়া থেকে ওই কিশোরকে আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সম্পূর্ণ ঘটনা পরিষ্কার হয়।