400 বছরের পরম্পরা মেনে মায়ের পুজো মেদিনীপুর, 7 নভেম্বর: সামনেই কালীপুজো ৷ হাতে আর মাত্র ক'টা দিন ৷ আর এখন চলছে তারই জোরকদমে প্রস্তুতি। তবে, মোটা কালী, বৃহৎ কালী এবং অন্যান্য কালী থেকে এই কালীমূর্তি একটু আলাদা। কথিত আছে, 400 বছর ধরে দেওয়ালে অর্থাৎ কাঁথে অবস্থান করেন দেবী কালী। তাই এর নাম কাঁথকালী। ফল-মূল নৈবেদ্যের সঙ্গে ছাগ বলির আয়োজন হয় মায়ের পুজোয়। বিভিন্ন মনস্কামনা নিয়ে দূর-দূরান্তের মানুষ ছুটে আসে এই কালী মায়ের কাছে এবং সফল হয়ে তারা মন্দির থেকে ফিরে যান ৷
বিপ্লবী আর ঐতিহ্যশালী মেদিনীপুরের অন্যতম হল মেদিনীপুর শহরের কাঁথকালীর কালীপুজো। এই পুজো প্রায় 400 বছরের পুরনো। মূলত, অন্যান্য জায়গার কালী প্রতিমা যেমন মণ্ডপের মধ্যে প্রবেশ করে এবং কাঠামোর মধ্যে দিয়ে তৈরি হয় আবার কোথাও কোথাও সিমেন্টের তৈরি করা থাকে কিন্তু এই কালী একটু আলাদা। মায়ের মূর্তি দেওয়ালে অর্থাৎ কাঁথের মধ্যেই 400 বছর ধরে অবস্থান করছে, তাই তার নাম দেওয়া হয়েছে কাঁথকালী। কথিত আছে কোনও এক সময় এই মাটির দেওয়ালেই এক সাধু এই কাঁথকালী পুজো শুরু করেন।
একটি বৃহৎ গাছের আকঁড়ে থাকা দেওয়ালে এই কালীপুজোর সূচনা তার হাত ধরেই চলছিল। পরবর্তীকালে হাত পরিবর্তন হতে হতে এই কালীপুজো এখন পরিচালনা করেন এলাকার মানুষ কমিটির মাধ্যমে। নির্দিষ্ট কমিটির মাধ্যমে ধুমধাম করেই চলে এই কালীপুজো। এই কালীর বিসর্জনও হয় না। তবে কালীপুজোর পরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে গোটা শহর পরিক্রমা করে। ঢাক-ঢোল বাদ্যি সহকারে সেই পরিক্রমায় অংশগ্রহণ করেন শহরের মানুষ।
মূলত তান্ত্রিক মতে পুজো হন মা নিজেই। প্রায় 2 কুইন্টালের উপর মায়ের ভোগ হয়। তার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ভোগ গৃহ। এই নিয়ে বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ সুমঞ্জিৎ দে বলেন, "পুরনো সেই কথা অনুযায়ী আমরা এই পুজো করে আসছি এবং এই কালীপুজো আমাদের তান্ত্রিক মতে হয়। মূলত আমাদের কালীমা কাঁথ বা দেওয়ালে অবস্থান করে বলেই এর নাম কাঁথকালী। তবে সেই পুরনো পরম্পরা মেনে আজও আমরা বলির ব্যবস্থা করে থাকি এবং সেই বলি দেখতে হাজির হন অসংখ্য মানুষ ৷" এখন অপেক্ষা সেই কালীপুজোর।
আরও পড়ুন:পুজো বন্ধ করতে চেয়েছিল ব্রিটিশরা, বিপ্লবী আন্দোলনের স্মৃতি নিয়ে আজও কালী বন্দনায় নায়েক পরিবার