নিষ্কলঙ্ক তাপসকেই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেললেন মমতা

আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে রানিগঞ্জে প্রার্থী করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেললেন তৃণমূল সুপ্রিমো ? তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় নিষ্কলঙ্ক বলেই কি বামদুর্গ রানিগঞ্জ জিততে দলের এই সিদ্ধান্ত, উঠছে প্রশ্ন।

আসানসোল, 6 মার্চ : আসানসোলের মেয়র ছিলেন । গত 10 বছর ধরে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক । এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান । অথচ আজ পর্যন্ত তাঁর সম্পর্কে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই । বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও তাঁর সম্পর্কে কোনও খারাপ মন্তব্য করতে পারেন না । এমনই স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তাঁর । সেই নিষ্কলঙ্ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এবার দল বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল । আসানসোলের বাকি বিধায়করা নিজের নিজের আসনে লড়াই করার সুযোগ পেলেও, নিজের বিধানসভা ক্ষেত্র আসানসোল দক্ষিণ থেকে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলেন না তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় । রানিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হল তাঁকে ।

রানিগঞ্জ চিরকালই বামদুর্গ বলে পরিচিত । যদিও 2011 সালে পরিবর্তনের সময় বামপ্রার্থীকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তৃণমূলের সোহরাব আলি । কিন্তু 2016-তে সোহরাব আলির বিবি নার্গিস বানু বামপ্রার্থীর কাছে হেরে যান । বর্তমানে রানিগঞ্জে বাম বিধায়ক রয়েছেন রুনু দত্ত ।

এই পরিস্থিতিতে এই কেন্দ্রে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার দু'টি কারণ থাকতে পারে । প্রথম কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন রানিগঞ্জ পুনর্দখল করতে । সেই কারণে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষকে রানিগঞ্জে প্রার্থী করা হল । অন্যদিকে গত লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে হেরেছিল তৃণমূল । সেই কারণে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেখান থেকে সরিয়ে সেলিব্রিটি প্রার্থী নিয়ে আসা হয়েছে যাতে সেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করা যায় ।

এপ্রসঙ্গে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন,"ঠিকই আছে । দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাই মেনে নিয়েছি । প্রচুর ফোন পাচ্ছি । মানুষজনের শুভেচ্ছা পাচ্ছি ।"

আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে সায়নী ঘোষ প্রার্থী হয়েছেন শুনে তিনি বললেন, "যিনি বর্তমান প্রার্থী হয়েছেন তাঁকে কোথাও শুনতে হবে না যে বিধায়ক ফোন করলে আসত না, বিধায়ক চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেননি, বিধায়ক কাজ করেননি, কোনও রকমের ব্যক্তিগত বিড়ম্বনার কথা শুনতে হবে না । তাঁর লড়াই খানিকটা হলেও সহজ হবে ।"

তবে এই চ্যালেঞ্জের মুখে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফেলে দেওয়ায় তিনি অন্য শিবিরে যুক্ত হতে পারেন বলে এমন আশঙ্কাও করছেন দলের অনেকেই । যদিও তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি জানালেন, "আমাকে যদি প্রার্থী নাও করা হত, কিংবা আগামী দিনে যদি আমার প্রার্থীপদ বাতিল করে দেওয়া হয় তাও আমি দল পরিবর্তন করব না ।"