আসানসোল, 3 মার্চ: অবসর নিয়েছেন বছর দুই আগেই। তবু পড়াতে ভালোবাসেন ৷ ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসার টানে তাই অতিথি শিক্ষক হিসেবে ফের স্কুলে যোগদান। কিন্তু চাকরির শেষ জীবন যে এত কষ্টের হবে ভাবতে পারেননি শিক্ষক সুকুমার কাইতি। রোজ স্কুলে আসেন। স্কুল ঝাড়ামোছা করেন। রেজিস্ট্রার উলটে পালটে দেখেন। কিন্তু পড়াতে পারেন না। কারণ স্কুলে একটাও ছাত্র নেই। ফাঁকা ক্লাসরুমে সারাদিম একা কুম্ভের মতো বসে থাকেন সুকুমার স্যর। ছাত্রছাত্রীরা আসে না (Asansol Upper Primary School Situation)।
আসানসোলের মহিশীলা গ্রাম আপার প্রাইমারি স্কুল। মহিশীলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গা-ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে এই স্কুল। অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইতিউতি ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা থাকলেও আপার প্রাইমারি স্কুলে পড়তে আসে না আর কেউ। এই স্কুলে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর কথা। রেজিস্ট্রারে 11 জন ছাত্রছাত্রীর নাম লেখা আছে। আসে না কেউই। স্কুল চত্বরে এক ছাত্রী ও তার মা কে দেখা গেল শুধু। মা এসেছেন মেয়ের টিসি নিতে। অন্য স্কুলে ভরতি করবেন। সত্যি তো একা মেয়েকে কী করেই বা স্কুলে পাঠাবেন।
স্কুলে একজনই শিক্ষক সুকুমার কাইতি। আগে তিনি বারবনী গৌরাণ্ডি স্কুলের সহপ্রধান শিক্ষক ছিলেন। বছর দুই আগে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু চাইতেন স্কুলে ফিরতে। আবার পড়াতে। আবার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সময় কাটাতে। তাই অতিথি শিক্ষক হিসেবে পুনরায় যোগদান করেছেন। কিন্তু ভাগ্যে পড়েছে এমন একটি স্কুল যেখানে তার কোনও কাজ নেই। সকাল সাড়ে দশটায় স্কুলে আসেন প্রতিদিন। স্কুলের দরজা খুলে বসেন। ঝাড়ামোছা করেন। রেজিস্ট্রার নাড়াচাড়া করে দেখেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য আসা পোশাক বই যত্ন সহকারে রাখেন। কিন্তু ছাত্রছাত্রী নেই।