আসানসোল, 5 অগস্ট: তিনি সকলের আপনজন । আসানসোল মহকুমার তামাম বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের কাছে তিনি মনের মানুষ । যাদের জীবন থেকে আনন্দ চলে গিয়েছে ৷ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যারা প্রান্তিক কোনও বৃদ্ধাশ্রমে জীবনের শেষ দিনের অপেক্ষায় অন্ধকারময় জীবন কাটাচ্ছেন ৷ তাদের জীবনে আনন্দের আলো এনে দেন আসানসোলের 59 বছরের সনৎ বকসি । নাচে-গানে-অভিনয়ে, গল্পে এক-একটা বিকেল বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের মাতিয়ে রাখেন তিনি ।
আসানসোলের হিরাপুরের ধ্রুবডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা এই সনৎ বকসি । পেশায় ফটোগ্রাফার । একসময় চিত্র সাংবাদিকতাও করেছেন । এর পাশাপাশি সনৎ একজন যোগা শিক্ষিকও । যোগাসন শেখানোর পাশাপাশি তিনি ম্যাসাজ থেরাপিও জানেন । তবে, এসবের বাইরে সনৎ বকসি একজন সমাজকর্মী । মানুষের যেকোনও প্রয়োজনে রাতবিরেতেও ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি । কোন নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা অসুস্থ, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, কেউ মারা গিয়েছে শ্মশানে নিয়ে যেতে হবে, কিংবা কারও রক্তের দরকার, তাকে রক্ত দিতে হবে ৷ সনৎ বকসিকে একবার ফোন করলেই ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে যান তিনি ।
দীর্ঘ কোভিডের সময়ও মানুষকে সেবা দিয়ে গিয়েছেন সনৎ ৷ যখন মানুষজন করোনা রোগীদের দেখে ভয় পেয়ে দূরে থাকার চেষ্টা করছে, তিনি তখন শতাধিক রোগীকে তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভরতি করেছেন । কেউ মারা গেলে তার দেহ নিয়ে গিয়েছেন শ্মশানে । আর এই কাজে তিনি একা নন ৷ তাঁর পাশে রয়েছে সংগঠন ৷ 2006 সাল থেকেই সনৎ বকসি তাঁর নিজের সংগঠন শুরু করেছেন ৷ যার নাম 'আপনজন'। এই আপনজনে রয়েছেন এখন বহু সদস্য । যাঁরা এভাবেই সনতের সঙ্গে মানুষের জন্য কাজ করছেন । কিন্তু এই কাজের ফাঁকেও প্রায় প্রতিদিনই আসানসোলের বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে কিংবা অনাথ আশ্রমে পৌঁছে যান সনৎ বকসি এবং তাঁর আপনজনের পরিবার । উদ্দেশ্য মানুষকে আনন্দ দেওয়া ।
আরও পড়ুন:এক ফোনে হাজির, বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবায় নজির গড়ছেন সফিকুল