পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

লকডাউনে হোমে কেমন আছে প্রতিবন্ধীরা ? - লকডাউনে হোমে কেমন আছে প্রতিবন্ধীরা ?

হ্যাপি হোমই আজ এখানকার আবাসিকদের নিশ্চিন্ত ঠিকানা । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সমস্ত ছাত্রাবাস খালি করার যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তারপরেই বিপাকে পড়ে যায় এই হোমের পরিচালন সমিতি ।

COVID 19
ছবি

By

Published : May 4, 2020, 9:27 PM IST

Updated : May 6, 2020, 8:58 PM IST

দুর্গাপুর, 4 মে : লকডাউনের এই সময়ে হোমে আবাসিক শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েরা কেমন আছে ? এই কঠিন পরীক্ষার মুখে দাঁড়িয়ে কীভাবে তাদের দেখভাল করছেন কর্মীরা ? এর উত্তর মিলল দুর্গাপুরে প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি হ্যাপি হোমে । প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েরা কোনওভাবেই যাতে কোরোনায় সংক্রমিত না হয় সেই কারণে গত 24 মার্চ থেকে আর নিজেদের বাড়ি ফেরেননি আবাসনের কর্মীরা । বাড়ি যাননি আবাসন কমিটির সম্পাদিকাও ।

সবমিলিয়ে 35 জন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ের বাস এখানে । আবাসিকদের সুরক্ষার খাতিরে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু কড়া সিদ্ধান্ত । বাইরের লোক তো দূরস্ত, আবাসিকদের সঙ্গে অভিভাবকদের দেখা করাও বন্ধ করা হয়েছে । এখানে যে আবাসিকরা থাকে, তারা জানে না কীভাবে মাস্ক পরতে হয় । স্যানিটাইজ়ার কী ? তাও জানা নেই । তাই লকডাউনের সময় থেকে হোমের পরিচালন সমিতির সম্পাদিকা পাপিয়া মুখোপাধ্যায় ও বাকি 14 জন কর্মী, সকলেই রয়ে গেছেন হোমেই ।

2001 সালে দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর হর্ষবর্ধন রোডে শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য তৈরি হয় হ্যাপি হোম । রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েরা এখানে আবাসিক হিসাবে থাকে । এখানেই তাদের লেখাপড়া , সাংস্কৃতিক চর্চা , শরীরচর্চাসহ সব কিছুই ।

লকডাউনে কতটা সুরক্ষিত হ্যাপি হোমের আবাসিকরা ?

আজ হ্যাপি হোমই তাদের নিশ্চিন্ত ঠিকানা । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সমস্ত ছাত্রাবাস খালি করার যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তারপরেই বিপাকে পড়ে যায় এই হোমের পরিচালন সমিতি । কারণ এই এই শারীরিক প্রতিবন্ধীরা তাদের ঘরবাড়ি চেনেই না । দীর্ঘ 10-12 বছর থাকতে থাকতে আজ এই হ্যাপি হোমই তাদের ঘরবাড়ি । তাই হোমের পরিচালন সমিতির তরফে আইনি আবেদন জানিয়ে এই ছেলে-মেয়েদেরকে রাখা হয়েছে হ্যাপি হোমেই । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের ভীতি রয়েছে গেছে । তাই অতন্দ্র প্রহরায় হোম পরিচালন সমিতি ।

কাঁচা সবজি, খাবার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র যদি কেউ দিতে আসেন তাহলে তাঁকে হোমে ঢোকার আগে জীবাণুমুক্ত করার জন্য সম্পূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে ।

পাপিয়াদেবীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, "আসলে এই ছেলে-মেয়েরা জানে না কোরোনা সংক্রমণ কী? এরা জানে না মাস্ক পরতে । আমরা ওদের খাবার খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে দিই । আমরাই ওদের সঙ্গে সর্বক্ষণের সঙ্গী । লকডাউনের জেরে ওরা বাইরে বেরোতে পারছে না । ওদেরকে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না কোরোনা সংক্রমণের ভয়ে । তাই 14 জন কর্মী এবং আমি নিজে 24 মার্চ তারিখ থেকে ওদের সঙ্গেই রয়ে গেছি । বাইরে বেরোতে পারছে না বলে ওদের মনোরঞ্জনের জন্য নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কাজকর্ম আমরা করছি । ওদের বাড়িতেও ছাড়া যায়নি । বাড়ির লোকরা ওদেরকে এই যত্ন নিয়ে রাখতে পারতেন না ।"

Last Updated : May 6, 2020, 8:58 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details