পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

ছেলেকে বলেছিলাম কুসঙ্গ ত্যাগ করে ব্যবসা কর, বলছেন সৌমাল্যর বাবা - breaking news today

গত 9 জুন হাওড়ার সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত দুইলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনা ঘটে ৷ রুচিসম্পন্ন শিক্ষিত পরিবারের ছেলে, সৌমাল্য কিভাবে অপরাধে লিপ্ত হয় তা নিয়েই পুলিশ হয়রান । বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা বলছেন, ‘‘ছেলেকে বলেছিলাম, কুসঙ্গ ত্যাগ করে ব্যবসা কর ।’’

পুত্রস্নেহে অন্ধ, বাবার বিশ্বাস, ছেলে চুরি করতে পারে না
পুত্রস্নেহে অন্ধ, বাবার বিশ্বাস, ছেলে চুরি করতে পারে না

By

Published : Jun 22, 2021, 9:10 PM IST

আসানসোল, ২২ জুন : ছেলে চোর ! সহ্য করতে পারেননি মা ৷ তাই ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার দু‘দিনের মধ্যেই আত্মঘাতী হলেন তিনি ৷ সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে দু’বছরেরও বেশি সময় ৷ কিন্তু তার পরও বদলাননি ছেলে ৷ বরং সম্প্রতি একই কাজ করার অভিযোগে তাঁর আবার ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে ৷

এতক্ষণ যাঁর কথা পড়লেন, তিনি সৌমাল্য চৌধুরী ৷ সম্প্রতি হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে ৷ জেলার নাজিরগঞ্জে একটি চুরির ঘটনায় তিনি মূল অভিযুক্ত ৷ ঘটনার কথা পৌঁছেছে সৌমাল্যর বাবা সলিলকুমার চৌধুরীর কাছে ৷ এই খবর পেয়ে স্ত্রীকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ এই বৃদ্ধর চোখে জল ৷ কাঁদতে কাঁদতেই বলছেন, ‘‘ছেলেটা আমাকে পুরো নিঃস্ব করে দিয়েছে ৷’’

আরও পড়ুন :ECL coal mines : ইসিএলের খনি এলাকায় ধস, বিষাক্ত ধোঁয়ায় আতঙ্ক

সলিলবাবু পূর্ত বিভাগে কাজ করতেন ৷ স্ত্রী মধুছন্দাদেবী ছিলেন বার্নপুর গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা ৷ অবস্থাপন্ন, স্বচ্ছল পরিবার ৷ সেই পরিবারে বড় হয়েও কেন চুরির নেশা হল সৌমাল্যর ? উত্তর হাতড়াচ্ছেন ওই বৃদ্ধ ৷ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছেন, ‘‘ছোটবেলায় মায়ের থেকে, আমার থেকে টাকা সরাত ৷’’ কিন্তু সেটাই যে বড় হয়ে চুরির নেশায় পেয়ে বসবে কে জানত ?

আর সেই নেশার কথা যখন প্রকাশ্যে আসে, তখন তা মেনে নিতে পারেননি মধুছন্দাদেবী ৷ সলিলবাবু জানালেন, ২০১৮ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি চুরির দায়ে প্রথম গ্রেফতার হয় সৌমাল্য । সেই ঘটনা মেনে নিতে না পেরেই দু’দিন পর আত্মঘাতী হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ৷ তার পর থেকে আসানসোলের কোর্ট মোড় এলাকায় বহুতল আবাসনে তাঁর নিঃসঙ্গ জীবনযাপন শুরু ৷

আরও পড়ুন :Kaliachak Murder Case : কীভাবে খুন-কীভাবেই বা বাঁচল দাদা, ঘটনার পুনর্নির্মাণে দেখাল আসিফ

যদিও পরে ছেলে ছিল কিছুদিন ৷ তিনি ভেবেছিলেন ছেলে বোধহয় শুধরে গিয়েছে ৷ কিন্তু নাহ ! বরং বাবার সঞ্চয়, মায়ের সঞ্চয় সব নিয়েই নিয়ে চলে যান সৌমাল্য ৷ সলিলবাবুর দাবি, সব মিলিয়ে প্রায় 19 লক্ষ টাকা নিয়ে চলে গিয়েছে ছেলে ৷ এমনকী, বাড়ির দলিলও নিয়ে গিয়েছে ৷

তার পর... ! এবার সলিলবাবুর কথায় কিছুটা আক্ষেপ ধরা পড়ে ৷ তিনি জানান, ছেলে যোগাযোগ করেছিল ৷ জানিয়েছিল, মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় থাকে ৷ চাকরিও পেয়েছে ৷ সেখানে গিয়েওছিলেন তিনি ৷ তার পর কী যে হল, এখনও ধন্দে সলিলবাবু ৷ তবে ছেলে যদি সত্যিই চোর হয়, তাহলে সৌমাল্যর শাস্তির দাবি এখনই জানিয়ে রাখলেন তিনি ৷

আরও পড়ুন :Crime in Malda : বাবার টাকা হাতাতে অপহরণের নাটক ছেলের, অপরাধের সিরিজ মালদায়

কিন্তু বাবা তো ! তাই ফের হতাশা ঝরে পড়ে তাঁর গলায় ৷ বলেন, ‘‘ছেলেকে বলেছিলাম, কুসঙ্গ ত্যাগ করে ব্যবসা কর । আমার ছেলে খুব সৎ ছিল ।’’

হয়তো তিনি ভাবছেন, ‘‘যদি আমার কথা শুনত সৌমাল্য ৷ তাহলে.... ৷’’

ABOUT THE AUTHOR

...view details