দুর্গাপুর, 6 জুন: পরিত্যক্ত চাণক থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়া ৷ আর তা বিষাক্ত বলেই জানাচ্ছে স্থানীয়রা ৷ ঘটনাস্থলের পাশেই রয়েছে বসতি এলাকা ৷ সোমবার বিকেলে এই ঘটনাটি অণ্ডাল থানার কাজোড়া এরিয়ার হরিশপুর গ্রামের । 2020 সালের পর আবারও এই ঘটনায় আতঙ্কিত গ্রামের বাসিন্দারা ৷
2020 সালে প্রথমবার ইসিএলের কাজোড়া এলাকায় হরিশপুর গ্রামে ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটে ৷ সে সময় একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয় ৷ বেশ কিছু পাকা বাড়ি ভেঙে যায় ৷ এরপরও একাধিকবার এমন ধসের ঘটনা ঘটেছে ৷ বহু বাড়িঘর, এমনকী চার চাকা গাড়িও সেই সময় মাটির গভীরে চলে যায় ৷ সেদিন আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছিল বহু মানুষ ।
এলাকাটি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে ৷ পুনর্বাসনের দাবি তুলে বিক্ষোভ, আন্দোলনের পাশাপাশি জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয়রা ৷ এই ব্যাপারে প্রশাসনের গড়িমসির কারণে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছিল বাসিন্দাদের একাংশ ৷ তবে এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি ৷ ঘরবাড়ি ছেড়ে যাঁরা অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বাধ্য হয়ে সম্প্রতি জন্মভিটেয় ফিরে এসেছেন ।
আরও পড়ুন: মাঝ খনিতে ডুলির যন্ত্রাংশ বিকল, দু’ঘণ্টা পর উদ্ধার 14 শ্রমিক
এলাকায় ফিরে এল সেই আতঙ্কের দিন ৷ হরিশপুর গ্রামের ঝড়েপাড়া এলাকার কাছেই কাজোড়া এলাকায় পরিত্যক্ত খাদানের চাণকের মুখ থেকে বের হচ্ছে বিষাক্ত গ্যাস, সঙ্গে ধোঁয়া । বিদ্যুৎগতিতে খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাস্থলে ভিড় জমিয়েছে বাসিন্দারা ৷ স্থানীয় বাসিন্দা রবীন সরকার জানালেন, এখানে কাজোড়া এরিয়ার মাধবপুর 12 নম্বর কোলিয়ারি ছিল ৷ অনেকদিন আগে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাণকের মুখ বন্ধ করে দেওয়া আছে ৷ সেখান থেকে গ্যাস, ধোঁয়া বের হচ্ছে ৷ এই এলাকার বাসিন্দারা প্রতিদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে ৷
রবীন সরকারের অভিযোগ, গ্যাস, ধসের মোকাবিলা করতে ব্যর্থ ইসিএল কর্তৃপক্ষ ৷ এই এলাকার প্রশাসনিক আধিকারিকরা ৷ কাজোড়া এরিয়ার সেফটি অফিসার-সহ বেশ কয়েকজন আধিকারিক ঘটনাস্থলে এলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় বাসিন্দাদের একাংশ । আধিকারিকদের কাছে দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয় ৷
ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অণ্ডাল থানার পুলিশ ৷ গ্যাস, ধোঁয়া বেরনোর কারণ নিয়ে ইসিএল আধিকারিকদের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি ৷ এই হরিশপুর গ্রাম পরিদর্শনে মন্ত্রী মলয় ঘটক থেকে স্থানীয় বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সবাই গিয়েছেন ৷ পুনর্বাসন সমস্যার সমাধান হয়নি ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক মাস আগেই ইসিএল-এর বিরুদ্ধে পুনর্বাসন প্যাকেজ এর অর্থ বরাদ্দ না করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী উত্তরাখণ্ডের ভয়াবহ ধসের ঘটনার প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ৷ রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার বহু জায়গা ধসে মাটির গর্ভে চলে যেতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ৷ এখন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে প্রহর গুণছেন মানুষ ৷
আরও পড়ুন: ইসিএলের খনি এলাকায় ধস, বিষাক্ত ধোঁয়ায় আতঙ্ক