দুর্গাপুর, 12 ডিসেম্বর : এক সময়ের আবর্জনার স্তূপ আজ প্রায় 100 টি কৃষক পরিবারের প্রচেষ্টায় সবুজ উপত্যকায় পরিণত । দুর্গন্ধময় সেই স্তূপ সরিয়ে আজ বাহারি শাক-সবজি, ফুলের চাষ করে দুর্গাপুরের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন একশোটি কৃষক পরিবার । শুধু তাই নয়, স্থানীয় বাজারে মানুষ পাচ্ছেন তাজা কাঁচা সবজি । শিল্প শহরে এই পরিবারগুলি এসেছিলেন শিল্প-কলকারখানায় জীবিকার সন্ধানে । কিন্তু কলকারখানায় কাজ না পাওয়া পরিবারগুলি সবুজ বিপ্লব ঘটিয়ে খুঁজে পেয়েছেন জীবিকার সন্ধান ।
দুর্গাপুরের কবিগুরু থেকে বিধাননগর যাওয়ার মূল রাস্তার পাশে রয়েছে একটি জমি ৷ সেটি মূলত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জন্য অধিকৃত ছিল ৷ যা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল ৷ কিন্তু সেই জমির উপরে দুর্গাপুর পৌরসভা এলাকার সমস্ত জঞ্জাল আবর্জনা ফেলা হত। এই রাস্তার পাশে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় ছাড়াও দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয় রয়েছে । হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কয়েক বছর আগেও এই জমিতে দুর্গন্ধের কারণে পরিবেশ একেবারে দূষিত হয়ে গিয়েছিল । যার কারণে দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয় শিক্ষকরাও এই আবর্জনা ফেলার প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ।
আজ সেই জমিকে দিনরাত এক করে চাষযোগ্য জমি করে তুলেছেন প্রায় 100 টি পরিবার । রাস্তার দুই পাশে ফাঁকা থাকা জমিতেই শুধু নয়, জঙ্গলের মাঝে ফাঁকা জায়গাগুলিতেও সবুজ শাকসবজি চাষ করে কার্যত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তাঁরা । বছরে দশ মাস চাষ হয় । কারণ এলাকায় জলের প্রচণ্ড অভাব । তাই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে কৃষি কাজ করা যায় না । গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন শাকসবজি এরা চাষ করেন। উৎপাদিত শাকসবজি স্থানীয় বেনাচিতি, চন্ডীদাস বাজার ,মামড়া বাজার, মুচিপাড়া বাজার-সহ এই রাস্তার দু'পাশে বিক্রি করা হয়। দুর্গাপুরের মানুষ এই কৃষক পরিবারগুলির সৌজন্যে তাজা শাকসবজি খাওয়ার স্বাদ পাচ্ছেন । আর কৃষক পরিবারগুলি এই আবর্জনার স্তুপ সরিয়ে সবুজ উপত্যকা গড়ে তুলে খুঁজে পেয়েছেন জীবিকার সন্ধান।