পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

সুইচে হাত না দিয়েই জ্বলবে আলো, ঘুরবে পাখা

মাইক্রো কন্ট্রোলার ব্যবহৃত সুইচ বোর্ড । আর এই মাইক্রো কন্ট্রোলারের মধ্যে রয়েছে একটি সেন্সর । এর মাধ্যমে সুইচে হাত না দিয়েই ফ্যান চালানো, লাইট জ্বালানো সম্ভব হবে ।

Asansol
কামরান হাসান ও তাঁর স্পর্শহীন সুইচ বোর্ড

By

Published : Jun 5, 2020, 5:54 PM IST

Updated : Jun 5, 2020, 11:02 PM IST

আসানসোল, 5 জুন : কোরোনার সংক্রমণ রুখতে এবার স্পর্শহীন সুইচ বোর্ড নিয়ে এল আসানসোল ইঞ্জিনিয়রিং কলেজ । আর এই সুইচ বোর্ড বানাতে খরচও নামমাত্র । মাত্র 360 টাকাতেই তৈরি করা সম্ভব এই স্পর্শহীন সুইচ বোর্ড । সুইচ বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি মাইক্রো কন্ট্রোলার । আর এই মাইক্রো কন্ট্রোলারের সাহায্যে সুইচ বোর্ডে হাত না দিয়েই ফ্যান চালানো, লাইট জ্বালানো-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ সারা যাবে ।

কোরোনা পরিস্থিতি দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হতে শুরু করেছে । প্রতিদিনই সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে নতুন রেকর্ড হচ্ছে । স্বাস্থ্যমন্ত্রক প্রকাশিত সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী দেশে একদিনে কোরোনার সংক্রমণ প্রায় দশ হাজার ছুঁই ছুঁই । একাধিক রিপোর্ট বলছে, প্লাস্টিকের ব্যবহারে এই কোরোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি । প্রায় তিন দিন পর্যন্ত প্লাস্টিকের মধ্যে এই ভাইরাস জীবিত থাকে বলে মত বিশেষজ্ঞদের । স্কুল-কলেজ, অফিস-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেখানে জনসমাগম বেশি সেখানে সুইচ বোর্ড থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বেশি থেকে যাচ্ছে । আর সেখান থেকেই অন্য রকমের ভাবনা আসানসোল ইঞ্জিনিয়রিং কলেজের ছাত্রের ।

কীভাবে কাজ করে এই স্পর্শহীন সুইচ বোর্ড ?

আসানসোল ইঞ্জিনিয়রিং কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র কামরান হাসান । এই প্রজেক্টটি ওই ছাত্রেরই মস্তিষ্কপ্রসূত । তাঁকে সহায়তা করেছেন কলেজের ওই বিভাগের শিক্ষক সৌমেন সেন । প্রজেক্টটির নাম দেওয়া হয়েছে "নো কন্টাক্ট সুইচিং সিস্টেম" ।

সুইচ বোর্ডে হাত না দিয়েই চলবে ফ্যান

কী এই প্রজেক্ট?

কামরান হাসান জানান, মাইক্রো কন্ট্রোলারের সাহায্যে এই প্রজেক্টটিকে কন্ট্রোল করা হয় । এর মধ্যে রয়েছে একটি সেন্সর । সেন্সরের সাহায্যে প্রথমে যন্ত্রকে সচল করে নেওয়া হয় । ওই যন্ত্রের সামনে 1.3 সেকেন্ড হাত রাখলেই সেই অবজেক্টকে "সেন্স" করে নিয়ে যন্ত্রটি সচল হয়ে যাবে । এরপর বিভিন্ন দূরত্বে ফ্যান, লাইট-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুইচ অ্যাসাইন করা থাকবে । আর বিভিন্ন দূরত্বে হাত নিয়ে গেলে কখনও ফ্যান বা লাইট-সহ অন্যান্য যন্ত্র প্রয়োজনমতো চালিয়ে নেওয়া যাবে সেন্সরের দ্বারা । অর্থাৎ, স্পর্শ না করেই শুধুমাত্র হাত সামনে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ চালু এবং বন্ধ করা সম্ভব ।

বিভাগীয় অধ্যাপক সৌমেন সেন জানিয়েছেন, এই প্রজেক্টের খরচ আনুমানিক 360 টাকা । যে কোনও জায়গায় এই যন্ত্র সহজেই লাগানো যায় । আসানসোল ইঞ্জিনিয়রিং কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্যকে এ-বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, "প্লাস্টিকের মধ্যে তিন দিন COVID 19 ভাইরাস সক্রিয় থাকে । আর সেই কারণেই আমাদের ছাত্র এই প্রজেক্টটি বানিয়েছে । প্লাস্টিকের সুইচ না স্পর্শ করেই আলো কিংবা অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালনা করা সম্ভব । যদি কোন স্কুল, কলেজ কিংবা অন্য কোনও সংস্থা এই বিষয়ে আমাদের সহায়তা চায়, তাহলে আমরা তাদের সহায়তা করতে প্রস্তুত । খুব অল্প খরচেই এই স্পর্শহীন সুইচ বোর্ড বানিয়ে দেওয়া যাবে ।"

যেখানে জনসমাগম বেশি, মানুষজন বেশি যাতায়াত করেন, সুইচ বোর্ডের ব্যবহারও বেশি হয় সেখানে । এই প্রজেক্টকে কাজে লাগিয়ে কোরোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমানো যাবে বলে আশাবাদী আসানসোল ইঞ্জিনিয়রিং কলেজ কর্তৃপক্ষ ।

Last Updated : Jun 5, 2020, 11:02 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details