আসানসোল, 2 জুন : বাড়ির মধ্যে এক কিশোরের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য ঘনীভূত হল আসানসোলে। গতরাতে আসানসোলের হিরাপুর থানার অন্তর্গত রাধানগর রোড পঞ্জাবি পাড়া এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে ওই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। নাম শরণদীপ সিং(12) । তার বাবা দাবি করেছেন, ঘটনার সময় তিনি পাড়ার দোকানে গিয়েছিলেন। হিরাপুর থানার পুলিশ কিশোরের বাবা ও পরিবারের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
হিরাপুর থানার অন্তর্গত রাধানগর রোড পঞ্জাবি পাড়ায় বাবা ভূপিন্দর সিংয়ের সঙ্গে থাকত শরণদীপ। বছর দুই আগে ভূপিন্দর সিংয়ের স্ত্রী মারা যান। বাড়িতে সদস্য বলতে- বাবা ও ছেলে। গতরাতে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় শরণদীপের দেহ। তার কপালে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে শরণদীপকে গুলি করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল? শরণদীপের বাবা ভূপিন্দর সিং জানান, "সন্ধেয় ছেলে আমাকে বলে সিঙাড়া খাব৷ এবং সুজি নিয়ে এস রাতে আমরা দু'জনে মিলে হালুয়া খাব । সেইমতো পাড়ার দোকানে আমি সিঙাড়া এবং সুজি আনতে গিয়েছিলাম। বাড়ি বাইরে থেকে তালা দিয়ে যাই। ফিরে এসে তালা খুলে ডাকাডাকি করি। কিন্তু, ছেলের কোনও সাড়া পাইনি৷ আমাদের বাড়িতে তিনটি ঘর আছে। খোঁজাখুঁজির পর দেখি, একটি ঘরে পড়ে আছে শরণদীপ। তার কপালে রক্তের দাগ। এরপরে আমি ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসকরা ওকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ছেলের কাছে আমিই ওর মা , আমিই ওর বাবা। এটা ঠিক হল না।"
কিন্তু কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? বাড়ি তালা বন্ধ থাকলে কেউ যদি শরণদীপকে খুন করে থাকে সে ঢুকল কী করে? উত্তরে তেমন কিছু জানাতে না চাইলেও বাবা ভূপেন্দর সিং জানিয়েছেন, "আমার বাড়ির জানালা খোলা ছিল।"
এদিকে পুলিশের তদন্তে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। যদি শরণদীপ আত্মহত্যা করে তাহলে ঘটনাস্থান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হত। তা পাওয়া যায়নি। জানালার বাইরে থেকে যদি গুলি করা হয় তাহলে কপালে আরও বড় গর্ত হত কিংবা খুলি উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এক্ষেত্রে তা হয়নি। মনে করা হচ্ছে, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে। বাড়ির বাইরের দরজা তালা বন্ধ ছিল । ভূপিন্দর সিং এসে তালা বন্ধ দেখেছেন। তাহলে শরণদীপের গুলি লাগল কী করে? পুলিশ কাউকে সন্দেহ থেকে বাইরে রাখছে না। অন্যদিকে এই ঘটনার পর হাসপাতাল চত্বরে ভূপিন্দর সিংয়ের পরিবারের অন্যান্য লোকেরা এসে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দু'-একজন মারধরেরও চেষ্টা করেন। পুলিশ ভূপিন্দর সিংকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যায়। আপাতত সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।