পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Shepherd Lifestyle: জঙ্গলের গভীরে অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে হাতে আসে সামান্য টাকা! ওরা মেষপালক

নিবিড় জঙ্গলের এক কোণায় তাঁবু খাটিয়ে থাকে ওরা ৷ ভাদ্রের চড়া রোদের গরম, বর্ষার বৃষ্টি মাথায় নিয়েই করে চলেছে মেষদের দেখাশোনা ৷ মুনাফার বড় অংক মেষ মালিকের হাতে থাকলেও হাজার খানেক মেষ নিয়ে নির্জন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেড়ায় ওই শ্রমিকরা। কীভাবে চলে ওদের দিন গুজরান খোঁজ নিল ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি ৷

Shepherd Lifestyle
কীভাবে চলে ওদের দিন গুজরান খোঁজ নিল ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 21, 2023, 9:02 PM IST

ভাদ্রের চড়া রোদের গরম, বর্ষার বৃষ্টি মাথায় নিয়েই করে চলেছে মেষদের দেখাশোনা

দুর্গাপুর, 21 সেপ্টেম্বর: ঝাঁ-চকচকে শহর দুর্গাপুরের এক প্রান্তে জঙ্গলঘেরা দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের হেতেডোবা গ্রাম। কালো পিচ রাস্তার পাশে চারিদিকে জনমানবশূন্য নির্জন জঙ্গল ঘেরা এলাকায় হঠাৎই চোখে পড়ল লুঙ্গি পরা, আদুল গায়ে কতগুলো মানুষ ভাদ্রের চড়া রোদে এক হাজারের বেশি মেষদের নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ত। কেউ কেউ মেষের শরীরের পশম কাটতে ব্যস্ত, কেউবা আবার ব্যস্ত পশম কাটার পরে মেষদের নিয়ে সামনে থাকা জলাশয়ে তাদের স্নান করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ওদের দিন গুজরান তুলে ধরল ইটিভি ভারত ৷

নির্জন জঙ্গলঘেরা এলাকার এক কোণায় নেট দিয়ে ঘেরা এলাকাতে রাখা হয়েছে সেইসব মেষদের যারা সদ্য মেষশাবক প্রসব করেছে। মা মেষ ও শাবকদের নিরাপদে রাখতেই তাদের ওই জাল দিয়ে ঘেরা এলাকাতে রাখা হয়। যাতে করে জঙ্গলের অন্য কোনও জীবজন্তু মেষশাবকদের তুলে নিয়ে না-যেতে পারে। আর ওই 7-8 জন মেষপালকরা নির্জন জনমানবহীন ওই এলাকায় থাকার জন্য তাঁবু তৈরি করেন। সেখানেই শুকনো ডালপালা জ্বালিয়ে কোনওক্রমে চলে রান্না।

কিন্তু ওরা কারা?ওরা কি মেষপালক? নাকি ওদের অন্য কোনও পেশা রয়েছে?

  • অকপটে ওরা জানান, সামান্য মাসোহারার বিনিময়ে ভেড়াগুলির দায়িত্ব পালন করতে হয় ওদের। মেষের শরীর থেকে কেটে নেওয়া পশম একটু বড় হলেই তা বিক্রির জন্য চলে যায় মেষগুলির মালিকদের হাতে। মুনাফার বড় অংক মেষ মালিকের হাতে থাকলেও হাজার খানেক মেষ নিয়ে নির্জন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেড়ায় ওই শ্রমিকরা। ওরা যেন যাযাবর। জঙ্গল ঘেরা এলাকায় প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বিষাক্ত কীটপতঙ্গের ভয় বুকে নিয়ে সামান্য উপার্জনের জন্য বছরভর বাংলা-ঝাড়খণ্ড-বিহার রাজ্যের বহু এলাকায় ঘুরে বেড়ায়।
    কীভাবে চলে ওদের দিন গুজরান খোঁজ নিল ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি
  • সন্তান স্নেহে মেষগুলিকে প্রতিপালন করেও ওরা কিন্তু কিছুই পায় না। কোনওরকমে যাযাবরের মতো দু'বেলা দু'মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকে ওরা। সঞ্জয় পাল, প্রবীণ কুমার দীর্ঘ প্রায় 15 বছর এভাবেই যাযাবরের মতো মেষদের নিয়ে জীবিকা অর্জনের পথ খুঁজে পেয়েছে। ওদের কথায়, "আমাদেরকে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। মাসে কেউ 10 হাজার, কেউ 15 হাজার টাকা বেতন পায়। দিনের বেলায় এই মেষদের চরানো, তাদের পশম কাটা, তাদের স্নান করানোর কাজ করতে হয়। আবার রাতের বেলায় এদেরকে আগলাতে হয়। জঙ্গলে থাকা শিয়াল-সহ বিভিন্ন জীবজন্তু যাতে এই মেষদের ক্ষতি না-করতে পারে তার জন্য রাত জেগে পাহারা দিতে হয়।"

উদয়-অস্ত পরিশ্রম করে এই মেষশাবকদের পরিচর্চাতে আজ ওরা যাযাবর ৷ বয়সের ভারে নুয়ে পড়েননি, 30 বছর এই ভাবেই জীবনযাপন করা 70 বছর বয়সি সীতারাম। এভাবেই সারাজীবন কাটিয়ে দিলেন এক প্রবীণ। প্রবল বৃষ্টি আবার কখনও সারাদিনের চড়া রোদ সবকিছুকে উপেক্ষা করেই এক চিলতে তাবুতেই জীবনযাপন এই শ্রমিকদের।

আরও পড়ুন:নির্মীয়মান বিল্ডিংয়ের লিফট ছিঁড়ে মৃত 4 শ্রমিক

ABOUT THE AUTHOR

...view details