দুর্গাপুর , 18 জুলাই : দীর্ঘ লকডাউনের কারণে বন্ধ স্কুল , কলেজ । বর্তমানে লকডাউন শিথিল হয়েছে । আনলক 2.0 পর্ব চলছে । বিভিন্ন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে । কিন্তু বিদ্যালয়গুলিতে পঠন-পাঠন এখনও বন্ধ । তবে থেমে নেই পড়াশোনা । বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছে । সেই কারণেই বাড়ছে ল্যাপটপ ও ডেস্কটপের চাহিদা । লকডাউনের প্রভাব সব ক্ষেত্রে পড়েছে । বিভিন্ন ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে । কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন পড়াশোনা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ওয়ার্ক ফর্ম হোম শুরু হওয়ায় ল্যাপটপ ও ডেস্কটপের বিক্রি বেড়েছে ।
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দোকানগুলিতে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের ভিড় বাড়ছে । দুর্গাপুরের বিভিন্ন দোকানে সেই ছবিটাই দেখা গেল । সকাল থেকেই দোকানগুলিতে ল্যাপটপ কেনার ভিড় । পড়ুয়াদের বক্তব্য একটাই । অনলাইন ক্লাসের জন্য তারা ল্যাপটপ কিনতে এসেছে । হরসপ্রীত নামে এক পড়ুয়া জানাচ্ছে , দিনে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে ক্লাস হয় । বেশিরভাগদিনই পাঁচটি বিষয়ে ক্লাস হয় । তাই অনলাইন ক্লাসের জন্য ল্যাপটপ খুব জরুরি হয়ে পড়ছে । তবে মোবাইল নিয়েও অনলাইনে পড়াশোনা করা যায় । কিন্তু তাতেও সমস্যা হচ্ছে পড়ুয়াদের ।
সমস্যাগুলি কী কী ?
মোবাইলের স্ক্রিন তুলনামূলক ছোটো । ফলে চোখের উপর চাপ পড়ে । দীর্ঘ সাড়ে চার বা পাঁচ ঘণ্টা একভাবে মাথা ঝুঁকিয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় বলে অনেকের ঘাড়ে ব্যথা হচ্ছে । শারীরিক সমস্যা বাড়ছে ।
তাই ছেলেমেয়েদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য় অভিভাবকেরা অনেকেই সাধ্যের বাইরে গিয়ে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কিনে দিচ্ছে । যেমন অনিল কুমার । তাঁর দুই মেয়ে । দুইজনেরই অনলাইনে ক্লাস চলছে । তিনি বলছেন ," একেই তো লকডাউন । আর্থিক সমস্যা রয়েছে । কিন্তু তার মধ্যেও বাচ্চাদের ল্যাপটপ কিনে দিতে হচ্ছে । কারণ মোবাইলে যদি এক ঘণ্টা একভাবে দেখে তাহলে চোখে সমস্যা হচ্ছে । ঘাড়ে ব্যথা হচ্ছে । তাই ল্য়াপটপ কিনে দিতে হচ্ছে । তার পাশাপাশি বেড়েছে ইন্টারনেটের খরচ ।"
ল্যাপটপ এখন পঠন-পাঠনের জন্য অত্যাবশ্যক পণ্য । এমনটাই জানাচ্ছেন এক ব্যবসায়ী দেবাশিস দত্ত । তাঁর কথায় আগে দিনে প্রায় 50 টি ল্যাপটপ বিক্রি হত । এখন তা বেড়ে হয়েছে 100 টি । তিনি বলছেন , " ডেস্কটপ , ল্যাপটপের চাহিদা বেড়েছে । আগে যেমন পরিবারে তিনজন লোক থাকলে একটা ল্যাপটপ দিয়ে কাজ চলে যেত । এখন বাবা ওয়ার্ক ফর্ম হোম করছে , ছেলে বা মেয়ে লার্ন ফ্রম হোম করছে । তাই তাদের ল্যাপটপ লাগছে । আবার অনেকের ল্যাপটপ থাকলেও তা পুরানো হয়ে গেছে । নতুন টেকনোলজিতে চলবে না । তাই ল্যাপটপের চাহিদা বেড়েছে । "
অনলাইন ক্লাসের জন্য বাড়ছে ল্যাপটপ ডেস্কটপের চাহিদা কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী জোগান দিতে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের । এই বিষয়ে তিনি জানাচ্ছেন , যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে , তাতে ব্যবসায় ঠিকমতো আমদানি হচ্ছে না । ফলে সবসময় চাহিদা অনুযায়ী জোগান দেওয়া যাচ্ছে না । পুরানো স্টক থেকে দেওয়া হচ্ছে । " আর এক ব্যবসায়ী শেখ আরশাদ বলছেন ," অনলাইন ক্লাসের জন্য ল্যাপটপ, ডেক্সটপের চাহিদা অবশ্যই বেড়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে আমরা জিনিসপত্র পাচ্ছি না । বিশেষ করে ল্যাপটপ, ডেক্সটপের বিভিন্ন সামগ্রী আমরা পাচ্ছি না । শোনা যাচ্ছে লকডাউনের সময় সরকার প্রোডাক্টগুলিকেও 14 দিনের জন্য স্যানিটাইজ় করছে । ফলে আমাদের জিনিস পেতে অনেক দেরি হয়ে যাবে । তাতে জোগান দিতেও সমস্যা হবে । "