আসানসোল, 17 ডিসেম্বর: আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনি খরচ মেটাতে 30 লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। এডুকেশন ফোরামের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করা হয়েছে। একেবারে নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে গত 16 মে থেকে 13 ডিসেম্বর পর্যন্ত 30 লক্ষ 46 হাজার 965 টাকা খরচ করা হয়েছে শুধুমাত্র এই আইনের লড়াইয়ের বিল মেটাতে। এই বিপুল পরিমাণে টাকা যদি পরিকাঠামোর স্বার্থে খরচ করা হত, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভুত উন্নতি হত বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।
গত বৃহস্পতিবার এডুকেশন ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনি খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করা হচ্ছে। এই খরচের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফাইন্যান্স কমিটি অথবা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে নির্দিষ্টভাবে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি খাতে খরচের হিসেব তুলে ধরা হয়েছে। যা 30 লক্ষ টাকার বেশি। এই টাকার অঙ্ক ভবিষ্যতে আরও বেশি হবে বলে দাবি এডুকেশন ফোরামের। পুরো বিষয়টি নিয়ে তারা অ্যন্টি করাপশন ব্যুরোকে দিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন।
এই বিষয়ে এডুকেশন ফোরামের সদস্য প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র আচার্যের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে বলেন, "রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে ৷ রাজ্য সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসারকে অন্ধকারে রেখে যেভাবে জনসাধারণের টাকাকে লুট করা হচ্ছে তার ধিক্কার জানাই। আচার্য কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাই আমরা রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, দুর্নীতি দমন শাখার মাধ্যমে এই কারচুপিকে সামনে আনা হোক ৷"
আচার্য তথা রাজ্যপালকে ইঙ্গিত করেই এডুকেশন ফোরামের এই বিজ্ঞপ্তি। শুধু কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, একই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে। সূত্রের খবর, এই বাবদ তাদের অর্থ ব্যয় হয়েছে প্রায় 9 লক্ষ 90 হাজার। যদিও এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত জানান, আচার্য কীভাবে লড়াই করবেন? তিনি ব্যক্তিগতভাবে লড়াই করছেন না। তিনি 31টি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর শীর্ষস্তরে রয়েছেন। তাই 31টি বিশ্ববিদ্যালয়কেই তাকে রক্ষা করতে হবে।"
এই বিষয় কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও কেস করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেই কেস করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আইনি লড়াই লড়তে হয়েছে। আমার আসার আগে এখানে বেশ কিছু অনৈতিক কাজকর্ম চলছিল। যার ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি কেসে আমরা জিতেছি। এখনও কয়েকটি কেস চলছে।"
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, "অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা সংশ্লিষ্ট জায়গা থেকে অনুমোদন নিয়েছি। জোর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যদি কেউ কোনও বিষয়ে নিয়ে কেস করে তাহলে ভালো আইনজীবী না-দিতে পারি সেক্ষেত্রে তো বিশ্ববিদ্যালয় হেরে যাবে। তাই এই খরচ।"