দুর্গাপুর ব্যারেজে কচুরিপানা তুলতে গিয়ে বাধার মুখে কর্মীরা দুর্গাপুর, 8 অগস্ট: দুর্গাপুরে একের পর এক এলাকায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুর ব্যারেজের বর্ধমান ফিডার ক্যানেলের মুখে জমে থাকা কচুরিপানা তুলে নিয়ে ফেলা হচ্ছে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ৷ সেই কচুরিপানা পচে গিয়ে ছড়িয়েছে দুর্গন্ধ ৷ আর তাতেই বাড়ছে মশার প্রকোপ ৷ তাই ফের মঙ্গলবার কচুরিপানা তুলতে এলে গ্রামবাসীদের প্রবল বাধার মুখে পড়তে হয় সেচ দফতরের কর্মীদের ।
গ্রামবাসীদের দাবি, এই কচুরিপানা ডাম্পার করে তুলে নিয়ে গিয়ে অন্য কোথাও ফেলুক সেচ দফতর । যতক্ষণ না এই সমস্যার সমাধান হবে তারা কচুরিপানা তুলতে দেবে না । তাই এই পরিস্থিতিতে সকাল থেকে কচুরিপানা তোলার কাজ বন্ধ রয়েছে । গ্রামবাসীদের কথায়, প্রথম থেকে ছোট ছোট করে কচুরিপানার ঝাঁক কেটে ধীরে ধীরে ব্যারেজ দিয়ে ছাড়া উচিত ছিল ৷ তাহলে এত কচুরিপানা জমত না ৷ এই ক্ষেত্রে সেচ দফতরের গাফিলতি রয়েছে বলে তাদের অভিযোগ ৷ সে কারণেই এত কচুরিপানা জমে গিয়েছে বলে এলাকাবাসীরা দাবি করছে ৷
সেচ দফতরের এক কর্মী ক্যামেরার সামনে মুখ না-খুললেও তিনি জানান, এই বিষয়টা গুরুতর হওয়ার কারণ অন্য। ঝাড়খণ্ডে সেভাবে বৃষ্টি না-হওয়ার কারণে মাইথন পাঞ্চেত থেকে জল আসেনি দুর্গাপুর ব্যারেজের জলাধারে। তাই দুর্গাপুর ব্যারেজের মূল লকগেটগুলি দিয়ে জল রিলিজ করা হয়নি ৷ এর জেরে ফিডার ক্যানেলে কচুরিপানা ধীরে ধীরে ভরতি হয়ে গিয়েছে । মূল লকগেটগুলি দিয়ে যদি জল ছেড়ে দেওয়া হত তাহলে সেচের জন্য এই জল জমিয়ে ধরে রাখা যেত না । চাষের জল বেরিয়ে যেত । এবারে আমন চাষের জল চাইছে বর্ধমানের চাষিরা । সেই জল ছাড়তে গেলে এই প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা সরাতে হবে ৷ না হলে জল স্বাভাবিকভাবে জোর গতিতে ফিডার ক্যানেল দিয়ে যাবে না । আর এত কচুরিপানা তুলতে গিয়েই শুরু হয়েছে বিপত্তি ।
আরও পড়ুন:লকগেট ভাঙলেও বর্ধমানে চাষে প্রভাব পড়বে না, আশ্বাস প্রশাসনের
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর ব্যারেজের বর্ধমান ফিডার ক্যানেল দিয়ে জল ছাড়া হয় আমন চাষের জন্য ৷ তবে বেশ কয়েকদিন ধরে সেই জল সময়মতো না-পাওয়ায় আমন চাষে ক্ষতি হচ্ছে ৷ এত পরিমাণে কচুরিপানা জমে গিয়েছে বর্ধমান ফিডার ক্যানেলের মুখে যে তা সরাতেই হিমশিম অবস্থা সেচ দফতরের কর্মীদের । সেই কচুরিপানা কিছুটা রাতের অন্ধকারে তুলে তা নদীর পাড়ে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাখা হয়েছে ৷ এখন সেগুলি পচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে ৷ এর ফলে এলাকায় বেড়েছে মশার দাপট । শুরু হয়েছে সাপের উপদ্রব । বাচ্চারা এই রাস্তা দিয়ে স্কুল যাওয়ায় সমস্যায় পড়ছে । আর তাতেই রেগে আগুন গ্রামবাসীরা ৷ কচুরিপানা তুলতে তাই বাধা দিচ্ছে তারা ৷