দুর্গাপুর, 11 অগাস্ট : রাত প্রায় আটটা । দুর্গাপুর সিটিসেন্টারের ভিতরে চলছে চিন্তন শিবির । উপস্থিত শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন, সুরেশ পূজারি, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মতো কেন্দ্রীয় নেতারা । ছিলেন দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসু, লকেট চট্টোপাধ্যায়রাও । আলোচনা চলছে সংগঠন নিয়ে । মার খেয়েও কীভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে, কর্মীদের পাশে থাকতে হবে তা রাজ্য নেতাদের শেখাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা । বাইরে তখন স্থানীয় নেতা, কর্মীদের ভিড় । হঠাৎই রক্তাক্ত অবস্থায় দুর্গাপুর সিটিসেন্টারের কাছে এসে দাঁড়ালেন এক যুবক । মাথায় গামছা বেঁধে রক্ত আটকানোর চেষ্টা হয়েছে । থামেনি । তাঁকে দেখে চমকে যান সকলে । স্থানীয় এক নেতা দৌড় দিলেন সিটিসেন্টারের ভিতর । জানালেন, দলেরই এক কর্মী তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত । ফেটেছে মাথা । রক্তাক্ত অবস্থায় বাইরে দাঁড়িয়ে । শুনলেন নেতারা । বেরিয়ে এলেন সায়ন্তন বসু । ওই কর্মীর সঙ্গে একান্তে কথা বললেন । পাঠিয়ে দিলেন হাসপাতালে । কিছুটা হেঁটে পরে অটো চেপে হাসপাতাল গেলেন তিনি ।
নীতীশ নায়েক । বয়স 26 । বাড়ি কমলপুর । সিটিসেন্টার থেকে কিছুটা দূরে । তিনি আবার স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিখিল নায়েকের ভাইপো । রাতে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান । কী হয়েছে, জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, "তৃণমূল কর্মীরা আমাকে মেরেছে । আরও 6-7 জনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ।" কিন্তু, কেন ? নীতীশ বলেন, "আমি আগে তৃণমূল করতাম । কিন্তু, মমতা ব্যানার্জির কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে RSS-এ যোগ দিই । BJP-র হয়েও কাজ করি । সেইসঙ্গে কমলপুরে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাই । তৃণমূল নেতারা বিশেষ করে আমার কাকা এতে ক্ষুব্ধ । উনি দলবল নিয়ে এটা দখল করতে আসেন । আমরা শুনিনি । তাই, মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন ।" রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে না গিয়ে সিটিসেন্টারের সামনে চলে আসেন নীতীশ । চেয়েছিলেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পরিস্থিতির কথা জানাবেন । বলবেন, দুষ্কৃতীদের হাতে কীভাবে নিগৃহীত হতে হচ্ছে । পারেননি । সায়ন্তন বসু তাঁর কথা একপ্রস্থ শুনে শিবিরমুখো হন ।