দুর্গাপুর, 23 এপ্রিল : তৃণমূলের শ্রমিক আন্দোলনের চোখ রাঙানি! অভিযোগ, টেন্ডার হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্টে ঢুকতে পারছে না প্রায় শ'তিনেক রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বহনকারী ট্রাক । এর ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পরিবহণ মালিকরা । ঋণ নিয়ে ট্রাকগুলি কিনে গত জানুয়ারি মাস থেকে ব্যবসা ছাড়াই ঋণের কিস্তি মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবহণ মালিকদের (Indian oil bottling plant problem in Durgapur) ।
পরিবহণ মালিকদের একাংশের অভিযোগ, টাকা চাওয়া হচ্ছে তাঁদের কাছ থেকে ৷ সঙ্গে রয়েছে তৃণমূলের অন্দরের প্রবল দ্বন্দ্ব । সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক অচলবস্থা । কাটমানির ভাগাভাগির লড়াইয়ের অভিযোগ বিরোধীদের ৷ অচলবস্থা কাটাতে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে চিঠি লিখছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ৷ শুধু বিরোধীরা নয়, অন্য কেউ কেউ তাঁকে কলংকিত করার চেষ্টা করছে বলে ঘুরিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে পাল্টা তোপ দেগেছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ।
দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্ট পুরনো ট্রাকগুলির টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বর মাসে । নতুন ভাবে টেন্ডার করে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থা কর্তৃপক্ষ । সেই মোতাবেক টেন্ডারও হয় । টেন্ডারের শর্ত মেনে পরিবহণ মালিকরা নতুন ট্রাক কেনেন । শর্ত অনুযায়ী, রান্নার গ্যাস সরবরাহে এই সময়ে নতুন ট্রাক চলাচল করার কথা ছিল, কিন্তু রাজ্যের শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের শ্রমিক আন্দোলনে এখন এই ট্রাকগুলি দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্টে ঢুকতেই পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে (Truck owners alleged TMC barred truck from entering bottling plant) ।
পরিবহণ মালিকদের একাংশের অভিযোগ, টেন্ডারের শর্ত মেনে নতুন ট্রাক সংস্থার গেটে ঢুকতে গেলে বাধা দিচ্ছে স্থানীয় কিছু তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কর্মী ৷ এই আন্দোলনকারীরা দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামী ৷ কারণ, ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্টের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ।
পরিবহণ সংস্থার এক মালিক হরিহর যাদবের অভিযোগ, তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব, সঙ্গে দলের আসানসোল আর দুর্গাপুর লবির লড়াই আর তোলাবাজি, সব মিলিয়ে এখন নতুন ট্রাক কিনে বেশ বিপদে পড়ে গিয়েছেন তাঁরা ৷ যখনই ট্রাক বটলিং প্ল্যান্টের গেটে যাচ্ছে, তখনই বিভিন্ন অছিলায় টাকা চাওয়া হচ্ছে তাঁদের কাছ থেকে ৷ কোনও নেতা সামনে আসছে না কিন্তু তাঁর সাঙ্গ-পাঙ্গরা উৎপাত শুরু করেছে ৷ এর ফলে সেই জানুয়ারি মাস থেকে বিশাল আর্থিক ক্ষতির বোঝা তাঁদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে । অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করেন, তাহলে আরও ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করছেন টেন্ডার পাওয়া নতুন গাড়ির মালিকরা ।