পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Durga Puja 2022: কাঁকসার জঙ্গলের শ্যামরুপার পুজোতে মিশে রয়েছে ইতিহাস

এ রাজ্যের সর্বপ্রাচীন পুজোগুলির অন্যতম কাঁকসার ঘন জঙ্গলের শ্যামরুপার পুজো (Durga Puja Celebrate in Kanksa Forest) ৷ সেন বংশের সভাকবি তথা গীতগোবিন্দের রচয়িতা কবি জয়দেব (Jayadeva) দেবীর এই নামকরণ করেন ৷ এই পুজোর পরতে পরতে রয়েছে ইতিহাস ৷

Durga Puja 2022
কাঁকসার ঘন জঙ্গলের শ্যামরুপার পুজো

By

Published : Sep 14, 2022, 1:55 PM IST

দুর্গাপুর, 14 সেপ্টেম্বর:কাঁকসার ঘন জঙ্গলের মাঝে বহু ইতিহাস বিজড়িত এরাজ্যের সর্বপ্রাচীন দুর্গোৎসবের মধ্যে অন্যতম প্রধান দেবী 'শ্যামরুপা'-র পুজো। আরাধনা আজও অব্যাহত (Durga Puja 2022)। কাঁকসার জঙ্গলের দুর্গাপুজোয় দূর থেকে আসেন অগণিত ভক্ত । লালমাটির পথ, শালপিয়ালের ঘন জঙ্গল, গা-ছমছমে পরিবেশ, আর তারই মাঝে বিরাজ করেন দেবী শ্যামরুপা (Durga Puja Celebrate in Kanksa Forest)।

কথিত রয়েছে রাজা লক্ষণ সেন গৌড় রাজ্য ত্যাগ করে গড় জঙ্গলে আত্মগোপন করেছিলেন। তিনিই ঘন জঙ্গলের মাঝে শুরু করেছিলেন শ্যামরুপার পুজো। লক্ষণ সেন চলে যাওয়ার পর রাজা ইছাই ঘোষকে দিয়েছিলেন দায়িত্ব। শোনা যায় রাজা ইছাই ঘোষকে শ্যামরুপা দেবী স্বপ্নাদেশ দেন অষ্টমীর দিন যুদ্ধে যেতে। কিন্তু তিনি দেবীর নির্দেশ লঙ্ঘন করেন । যুদ্ধে যান সপ্তমীর দিন । সেই যুদ্ধে শুধু তাঁর পরাজয় হয়নি, গিয়েছিল প্রাণও ।

মনসামঙ্গলে লেখা রয়েছে, "শনিবার বারবেলা/যুদ্ধে যেওনা ইছাই গোয়ালা।" দেবীর নির্দেশ অমান্য করে ইছাই ঘোষ যুদ্ধে গিয়েছেন বলেই বিপত্তি ঘটেছিল এমনটা মনে করেন অনেকে। তারপরেই ইছায় ঘোষের অনুচরেরা শ্যামরুপার মূর্তি মন্দিরের অদূরে দ্বীপসায়েরের জঙ্গলে ভাসিয়ে দেয়। পরে অষ্টধাতুর মূর্তি বসিয়ে করা হয় পুজো। শোনা যায়, এক সময় কাপালিকদেরও বাস ছিল এখানে ৷ হত নরবলিও। সেই নরবলি বন্ধ করেছিলেন ভক্তকবি জয়দেব। তিনি ওই কাপালিককে বলেছিলেন, দেবী শান্ত, তিনি কখনই চান না যে নরবলি হোক ৷ তাই তো দেবীর নাম রুপা ৷ এরপর কবি কাপালিককে আরও বলেন, দেবী শ্যাম আসলে কৃষ্ণের রূপ ৷ সেই থেকেই দেবী শ্যামরুপা নামে পরিচিত ৷

সর্বপ্রাচীন পুজোর অন্যতম কাঁকসার ঘন জঙ্গলের শ্যামরুপার পুজো

আরও পড়ুন:চিকিৎসক অনুপমের হাতে মৃন্ময়ী হয়ে ওঠেন 'অনুপমা'

দিন পেরিয়েছে যুগ পেরিয়েছে কিন্তু কালের নিয়মে হয়নি কোনও পরিবর্তন ৷ গভীর জঙ্গলের মাঝেই হয়ে আসছে পুজো । রীতি মেনে হয় হয় নিত্যপুজোও । ভক্ত সমাগমও হয় রোজই। আর মাত্র কটা দিন তারপরই দুর্গাপুজো। এই মন্দিরের নীচেই যুদ্ধের সময় রক্তের স্রোত প্রবাহিত হয়েছিল । রক্ত নালা বলেও সুবিদিত। আজও এই জঙ্গলে সন্ধিপুজার আগে তোপধ্বনী শোনা যায়। এই তোপধ্বনি শোনার পরেই আশপাশের এলাকাগুলোতে বলিদান হয়। আজও নিত্যদিন এই মন্দিরে আগে শ্যামরুপার অন্নভোগ নিবেদন করা সম্পন্ন হলে তারপরে আসানসোলে বরাকর নদীর পাশে মা কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে (Maa Kalyaneswari Temple) ভোগ নিবেদন হয়।

ABOUT THE AUTHOR

...view details