আসানসোল, 27 জুলাই : সম্প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে যখন বালি পাচার রোধে সচেষ্ট হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন আসানসোলে ধরা পড়ল অন্য চিত্র ৷ বালি চুরি করতে গিয়ে দামোদরের গতিপথকেই রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে । কার্যত বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে দামোদর নদ । এমনই অভিযোগ উঠছে আসানসোলে । আসানসোলের কুলটি থানার অন্তর্গত শীতলপুর এলাকা এবং হিরাপুর থানার অন্তর্গত ঢাকেশ্বরী এলাকায় দামোদরের উপর বাঁধ তৈরি করে নদের গতিপথকে অবরুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । যার ফলে অস্তিত্ব হারাচ্ছে দামোদর ।
গতিপথ রুদ্ধ করে নদীবক্ষে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা বালি পাচারের জন্য নদের মাঝ বরাবর দেওয়া হচ্ছে বাঁধ ৷ যা পুরোপুরি বেআইনি । এখানে গেলে দেখা যাবে নদের বুকে ইট-পাথর, বোল্ডার, ছাই এমনকি কংক্রিট ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে । ভারী মেশিনপত্র, ট্রাক্টর, ডাম্পার-সহ অন্যান্য গাড়ি যাতে সহজেই নদের মাঝ বরাবর নিয়ে যাওয়া যায় তাই এমন ব্যবস্থা । এই রাস্তা দিয়েই নদের মাঝে নামানো হচ্ছে পোকল্যান্ড মেশিন ৷ তারপর সেই মেশিনের মাধ্যমে দামোদরের গহ্বর থেকে বালি বোঝাই করে করে নিয়ে আসা হচ্ছে ৷ ফলে গতিপথ হারিয়ে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে দামোদর । এমনভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে সম্পূর্ণরূপে বুজে যেতে পারে দামোদর নদ ৷ অন্তত এমনই আশঙ্কা করছেন নদী বিশেষজ্ঞরা ।
আরও পড়ুন :দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বায়োগার্ডেন প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতিতে উন্নয়নের দিশা দেখাচ্ছে
কুলটি থানার শীতলপুর ও হিরাপুর থানার ঢাকেশ্বরী এলাকা থেকে এইভাবেই চলছে বালি চুরি । ফলে অস্তিত্ব সংকটে দামোদর ।
বালি পাচারের উদ্দেশ্যে বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে দামোদর যদিও বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক কোনও মন্তব্য করতে চাননি । অতিরিক্ত জেলাশাসক সন্দীপ হাঁসদা জানান, অভিযোগ পেলেই তা খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
এই বিষয়ে কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার বলেন, "আমরা বর্তমানে সরকারে নেই ৷ কিন্তু আমরা পুলিশকে এই ঘটনা জানিয়েছি । যদিও এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।"
অন্যদিকে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, "এটি একটি অসামাজিক কাজ । দামোদরের গতিপথ আটকে দেওয়া কোনওমতেই মেনে নেওয়া হবে না । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন । সেই মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কঠোর শাস্তি হবে । যদি এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের লোকেরাও যুক্ত থাকে তাহলেও তাদের রেয়াত করা হবে না ।"
আশ্বাস দেওয়া হলেও ঠিক কবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা কেউ জানেন না । দামোদরের উপর এই বাঁধ তৈরির ফলে মাইথন জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়লে আশেপাশের অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে । তাই দ্রুত ব্যবস্থা নিলে তা গ্রামবাসীদের পক্ষেও মঙ্গল ৷
আরও পড়ুন :Covid : শিক্ষকের সচেতনতায় ভয়কে জয় করলেন আদিবাসী মহিলারা, নিলেন ভ্যাকসিন