রানিগঞ্জ, 11 জুলাই: রানিগঞ্জের আমরাসোতায় সিপিএমকে টেক্কা দেওয়া যাবে না ৷ এই মিথ এবার হয়ত ভেঙে যাবে বলেই সবাই ভেবেছিল ৷ একদিকে জেলার বিভিন্ন ব্লকে মনোনয়ন থেকে শুরু করে ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া হুমকি, মারধর, ছাপ্পার অভিযোগ উঠেছে ৷ কিন্তু, সেই সব কিছুকে উপেক্ষা করে ফের পশ্চিম বর্ধমান জেলায় রানিগঞ্জের আমরাসোতা গ্রাম পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রাখল বামেরা ৷ যদিও, গতবার জয়ী সিপিএম প্রার্থীরা দল বদলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ৷ এবারও তাঁরা তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁদের এবার আর জেতায়নি ওই পঞ্চায়েতের ভোটাররা ৷
সিপিএম-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরাসোতা চিরকালই বামদূর্গ ৷ সেখানে বিরোধীরা দাঁত ফোটাতে পারেনি ৷ আমরা গ্রামের মানুষদের ধন্যবাদ জানাই। তার পাশাপাশি মানুষ এটাও দেখিয়ে দিল যে গতবার জিতে যাঁরা দলবদল করে বামেদের হাত ছেড়ে চলে গিয়েছিল ৷ তাঁরা প্রার্থী হলেও, মানুষ কিন্তু সেই লালঝান্ডার সঙ্গেই থাকল ৷’’
2018 সালে রানিগঞ্জের আমরাসোতা গ্রাম পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছিল সিপিএম ৷ পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসন পেয়েছিল তারা ৷ একটি আসন পেয়েছিল তৃণমূল ৷ ভোটের দিনে শুধুমাত্র আমরাসোতা গ্রাম পঞ্চায়েতকে সিপিএমের হাত থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য দুষ্কৃতীরা তান্ডব চালিয়েছিল বলে অভিযোগ ৷ অভিযোগ বোমা পড়েছিল বৃষ্টির মতো ৷ কিন্তু গ্রামের আদিবাসী মানুষজন তীর ধনুক দিয়ে সেদিন রুখে দিতে পেরেছিল দুষ্কৃতীদের ৷ আর ফল হয়েছিল অটুট বাম দুর্গে পুনরায় বামেরাই দখল নিয়েছিল ৷
কিন্তু, তার পরেও আমরাসুতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সীমা বাউড়ি, নিমেশ বাউড়ি-সহ তিনজন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের যোগ দিয়েছিলেন ৷ পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে চলে আসে ৷ কিন্তু, সাধারণ মানুষ তা মেনে নিতে পারেনি ৷ 2023 সালে দলবদল করে সিপিএম থেকে আসা লোকেদেরই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল ৷ অন্যদিকে, সিপিএমের প্রার্থী ছিল নতুন মুখ ৷ এবার ভোটে নতুন করে কোন অশান্তি হয়নি ৷ আদিবাসীদের তীর-ধনুকের সামনে বুথ দখলের চেষ্টাও করেনি শাসকদলের দুষ্কৃতীরা ৷ যার জেরে ফল আবারও বামেদের দিকেই ৷