আসানসোল, 25 জানুয়ারি: সরস্বতী পুজো মানেই কৈশোরের এক অন্য অনুভূতি ৷ শুধুই দল বেঁধে পুজোর উৎসাহ নয়, সরস্বতী পুজোয় জড়িয়ে থাকে নান্দনিক আনন্দও ৷ পড়ুয়াদের নিজেদের হাতে তৈরি মণ্ডপ, সেখানে নিজেদের তৈরি শিল্প ও নৈপুণ্য দিয়ে মণ্ডপসজ্জা সবকিছু ৷ পাড়ায় পাড়ায় তখন খুদে পড়ুয়ারাই 'থিম মেকার' ৷ কার থিম, কার মণ্ডপ কতটা ভালো, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলে ৷ কিন্তু, কোনও পড়ুয়া স্কুলের বাগদেবীর আরাধনায় প্রতিমা তৈরি করছে, এমনটা খুব বেশি চোখে পড়ে না (Class Eight Student Shankar Dhibar Makes Saraswati Idol) ৷
আসানসোলের নরসমুদা জনকল্যাণ সমিতি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শঙ্কর ধীবর ৷ তার স্কুলের সরস্বতী প্রতিমা শঙ্কর নিজের হাতে তৈরি করেছে এবার ৷ প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে ফেলেছে শঙ্কর ৷ আর সময়ের মধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে পেরে আনন্দিত এই কিশোর ৷ শঙ্করের এই গুণে মুগ্ধ স্কুলের শিক্ষকরাও ৷ তাঁরাও শঙ্করের প্রশংসা করেছেন ৷ নরসমুদা গ্রামে এক চিলতে ছোট্ট বাড়ি শঙ্করদের ৷ তার বাবা নব ধীবর একজন মাছ বিক্রেতা ৷ আর তার মা জয়া ধীবর গৃহবধূ ৷ শঙ্করের দিদি আসানসোল বিবি কলেজে স্নাতকের ছাত্রী ৷
চার জনের সংসার নব ধীবরের মাছ বিক্রির টাকায় কোনও মতে চলে যায় ৷ শঙ্কর ছোটবেলা থেকেই প্রতিমা তৈরি করা শিখতে চেয়েছে ৷ বড় হয়ে সে মূর্তিকার হতে চায় ৷ তাই পাশের গ্রামে গিয়ে এক মৃৎশিল্পীর কাছে প্রতিমা তৈরি করা শিখেছে অষ্টম শ্রেণির শঙ্কর ৷ ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়িতে এবং স্কুলের শিক্ষকদের কাছে নিজের এই ইচ্ছের কথা জানিয়েছিল সে ৷ সেই সময় সকলে একটু চমকেই গিয়েছিলেন ৷
এমনকি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সেই সময় শঙ্কর জানিয়েছিল, স্কুলের সরস্বতী মূর্তি তৈরি করতে চায় ৷ কিন্তু, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের উপর সেই গুরু দায়িত্ব ছাড়তে ভরসা পাননি প্রধান শিক্ষক ৷ তবে তিনবছর পর সেই বিশ্বাস শঙ্করের উপর দেখিয়েছে তার স্কুল ৷ তবে, তার আগে শঙ্করের প্রতিমা তৈরি নিয়ে খোঁজ খবর নেন স্কুলের শিক্ষকরা ৷ তাই এবছর প্রধান শিক্ষক নিজে তাকে ডেকে প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন ৷ স্কুলের জন্য প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব পেয়ে শঙ্করও খুব খুশি হয়েছিল ৷ আর সেই দায়িত্ব সম্পন্ন করতে পেরে শঙ্করও খুব খুশি ৷