আসানসোল, 14 জুলাই: ফের যান্ত্রিক বিভ্রাটে তিহাড় জেল থেকে অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের আসানসোল সিবিআই আদালতে শুনানি হল না । শুক্রবার গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেনের ভার্চুয়াল শুনানি ছিল । কিন্তু যোগাযোগই করা যায়নি । এই নিয়ে পরপর দু’বার যান্ত্রিক বিভ্রাটে শুনানি পিছোল । এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে মেল পাঠিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন যেন আগামী 10 অগস্ট পরবর্তী শুনানিতে দু’জনকে ভার্চুয়ালি হাজির করানো হয় ।
তবে শুনানি না হলেও কেস ডায়েরিতে সায়গল হোসেনের আরও নতুন সম্পত্তির তথ্য কোর্টে জমা করেছে সিবিআই । একটি সিজার লিস্ট আদালতে জমা করে সিবিআই জানায়, আরও সাড়ে তিন কোটি টাকার সম্পত্তি সেহগালের স্ত্রী সোমাইয়া ও তাঁর মা লতিফা খাতুনের নামে আছে ।
সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য কোর্টে জানিয়েছেন, এই সম্পত্তিগুলির মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমির দলিল ও পেট্রল পাম্প । এই নিয়ে চতুর্থ পেট্রল পাম্পের হদিশ পাওয়া গেল । তাছাড়াও সায়গলের শ্যালকের নামে একটি নির্মাণকারী সংস্থার খোঁজ মিলেছে । বিনিয়োগ হয়েছে সেখানেও ।
আরও পড়ুন:অনুব্রতর মোবাইলের তথ্য বিকৃতির চেষ্টা ! ফরেনসিক পরীক্ষার নির্দেশ আদালতের
অন্যদিকে সুকন্যা মণ্ডলের নামে থাকা সম্পত্তিও সিবিআইয়ের র্যাডারে এসেছে । এএনএম অ্যাগ্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থায় ডিরেক্টর হিসেবে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল ও অনুব্রতর ঘনিষ্ট বিদ্যুৎবরণ গায়েনের নাম মিলেছে ৷ সিবিআইয়ের দাবি, ওই সংস্থায় 93 শেয়ার সুকন্যার নামে আছে । মাত্র 7 শতাংশ শেয়ার বিদ্যুৎবরণ গায়েনের নামে আছে ।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী জানতে চান, বিদ্যুৎবরণ গায়েনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না ! সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, বিদ্যুৎবরণ গায়েনকে দু'বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের তথ্য কোর্টে জমা দেয় সিবিআই ।
অন্যদিকে ধর্মরাজ রাইস মিল নামে আরও একটি চালকলের কথা উঠে এসেছে । এই সংস্থার কাগজ পরীক্ষা করে বিস্ময়ে অবাক হওয়ার পালা । গরুপাচারকারী বলে মূল অভিযুক্ত এনামুল হককে চাল বিক্রি করে টাকা পেয়েছে এই সংস্থা । যা পুরোপুরি মিথ্যে বলে দাবি সিবিআইয়ের ।
আরও পড়ুন:1 কোটি টাকা পেয়েছিলেন অনুব্রত, বোলপুরের সেই লটারি কাউন্টারে হানা সিবিআইয়ের
অনুব্রত মণ্ডল তাঁর আত্মীয়, ঘনিষ্টদের নামে যে প্রচুর পরিমাণে জমির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেগুলির মূল্য বাজার দরের চেয়ে অনেক কম করে দেখানো হয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের । যার ফলে রাজ্য সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে । শুধু তাই নয় নগদে কোটি কোটি টাকার জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে দেখেও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারক ।