পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Jitendra Tiwari: দুর্গাপুরে তৃণমূলের হয়ে ভোট লুট করার কথা প্রকাশ্য জনসভা থেকে স্বীকার বিজেপির জিতেন্দ্রর - তৃণমূল কংগ্রেস

Jitendra Tiwari on Vote Loot for TMC: 2017 সালে দুর্গাপুর নগরনিগম নির্বাচনে ভোট লুটের অভিযোগ ওঠে ৷ সেই সময় তৃণমূলে থাকা জিতেন্দ্র তেওয়ারির বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ ওঠে ৷ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে বিজেপির জনসভা থেকে জিতেন্দ্র তেওয়ারি 2017 সালে ভোট লুটের অভিযোগ স্বীকার করেছেন ৷

Jitendra Tiwari:
Jitendra Tiwari:

By

Published : Aug 3, 2023, 8:19 PM IST

দুর্গাপুরে তৃণমূলের হয়ে ভোট লুট করার কথা প্রকাশ্য জনসভা থেকে স্বীকার বিজেপির জিতেন্দ্রর

দুর্গাপুর, 3 অগস্ট: ভোটে লুট করার অভিযোগ যে রাজনৈতিক দল বা নেতার বিরুদ্ধে ওঠে, তাঁরা সবসময়ই সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন ৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি স্বীকার করে নিলেন 2017 সালে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ভোট লুটের অভিযোগ ৷ প্রকাশ্য জনসভা থেকে মানুষের কাছে এর জন্য ক্ষমাও চাইলেন ৷ সঙ্গে জানালেন, তিনি নিজে থেকে এসব করতে চাননি ৷ বরং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাপে পড়েই তাঁকে ভোট লুট করাতে হয়েছিল ৷

তবে যে দলের হয়ে এ দিন ভোট লুটের কথা স্বীকার করলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র, সেই তৃণমূল কংগ্রেসে তিনি আর নেই ৷ 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তিনি ওই দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলেই কি এখন তৃণমূলের হয়ে ভোট লুটের কথা স্বীকার করছেন জিতেন্দ্র ? অন্যদিকে তৃণমূল অবশ্য জিতেন্দ্রর দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে ৷ উলটে তাঁর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে বলেও কটাক্ষ করছে ৷

দুর্গাপুরে বিজেপির সভায় জিতেন্দ্র তেওয়ারি

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের কল্পতরু ময়দানে ছিল বিজেপির প্রতিবাদ সভা ৷ সেখানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ সেই সভায় হাজির হয়ে পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি 2017 সালে হওয়া দুর্গাপুর নগর নিগম নির্বাচনের প্রসঙ্গ টানেন ৷

তিনি বলেন, ‘‘আমি সেই সময় জেলা (পশ্চিম বর্ধমান) সভাপতি ছিলাম । আমাকে কলকাতার নেতারা চাপ দেয়, যাতে দুর্গাপুর নগরনিগমে বিরোধী শূন্য পৌরবোর্ড গঠন করা যায় । আমি তাদের কথা শুনে কীভাবে ভোট করেছিলাম মানুষ জানে । আমি দুর্গাপুরের মানুষের কাছে আজ এই জনসভা থেকে ক্ষমা চাইছি ।’’

উল্লেখ্য, দুর্গাপুর পৌরনিগমের মোট 43টি ওয়ার্ড ৷ 2017 সালে তৃণমূল কংগ্রেস 43টি ওয়ার্ডেই জিতেছিল ৷ সেই সময় পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘সর্বেসর্বা’ ছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারির ৷ তাঁর নেতৃত্বে মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে অবাধে লুঠপাঠ চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল । পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ভোট লুটের অভিযোগ স্বীকার করেছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি ৷ এবার একেবারে প্রকাশ্য জনসভায় তা স্বীকার করলেন ৷

পাশাপাশি এমন কিছু দাবি করলেন, যা শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করল ৷ জিতেন্দ্র তেওয়ারি এই সভা থেকেই দাবি করলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল এর আগের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর কাছে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থী হওয়ার জন্য । শুধু তাই নয়, রানিগঞ্জের বিধায়ক তথা আড্ডার (আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি) চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিজেপির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ তুলতে শোনা যায় বিজেপি নেতাদের ভাষণে । তাছাড়া জিতেন্দ্র তেওয়ারি দাবি করলেন, শাসকদলের অনেক প্রাক্তন কাউন্সিলর তাঁদেরকে বলেছেন আগামী পৌরনিগম নির্বাচনে বিজেপির টিকিট দেওয়ার জন্য । আগামী দুর্গাপুর নগরনিগম নির্বাচনে বিজেপির বোর্ড গঠিত হবে বলেও দাবি করেন তিনি ।

এই মঞ্চ থেকেই তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন । তিনি বলেন ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে আমি 15 বছর বয়সে বড় । ওর আমাকে কাকু বলা উচিত । কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাকু একজন । কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র । অন্য কাউকে তাই সে কাকু বলে না ।’’

জিতেন্দ্র তেওয়ারির অভিযোগের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জিতেন্দ্র তেওয়ারির ক্ষমতা হারিয়ে মস্তিষ্ক বিকৃতি হয়েছে । বিজেপিতে ও এখন পাত্তা না পেয়ে এইসব আবোল তাবোল বকছে । ও কার লোক এইটা প্রমাণ করার চেষ্টা করছে এখন । তৃণমূল নেতাদের নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে লাইন লাইটে আসতে চাইছে ।’’

ABOUT THE AUTHOR

...view details