আসানসোল, 13 সেপ্টেম্বর : ওঁদের কারও নেই স্বাস্থ্যসাথী ৷ মেলে না বিধবাভাতা ৷ আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার তো দুরঅস্ত । ওঁদের দুয়ারে সরকারও যায় না । ওঁরা পরিবার থেকে বিচ্যুত ৷ খানিকটা যেন সমাজ থেকেও । ওঁদের কথা কেই বা ভাবে । শহরের একদিকে যখন ভিড় চঞ্চলতা, অন্যদিকে তখন নিঃঝুম পরিবেশে ওঁরা রয়েছেন মহাকালের শেষ ইশারার অপেক্ষায় ।
ওঁরা আসানসোলের বিভিন্ন বৃদ্ধাবাসের আবাসিক । পরিবারের লোকেরা রেখে দিয়ে গিয়েছেন ৷ মাসিক খরচের টাকা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেন তাঁরা । কারও বা মাসের পর মাস টাকাই আসে না । বৃদ্ধাশ্রমের সেচ্ছাসেবীরা কোনওক্রমে সেবা করে যাচ্ছেন এই বৃদ্ধবৃদ্ধাদের ।
আরও পড়ুন :Asansol Special Story : তৃতীয় ঢেউয়ের আগে বৃদ্ধাশ্রমের নিঃসঙ্গ আবাসিকদের পাশে ইসিএলের চিকিৎসকরা
তাই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের কথা মাথায় রেখে আশ্রমেই যদি দুয়ারে সরকারের শিবির করা যায়, তা নিয়ে আর্জি জানাচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালকরা ৷ স্বাস্থ্যসাথী বা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অথবা অন্য কোনও ভাতার ব্যবস্থা হলে, শেষ সায়াহ্নে আসা অসহায় এই বৃদ্ধবৃদ্ধাদের অনেক সুবিধা হয় ।
নেই স্বাস্থ্যসাথী-লক্ষ্মীর ভান্ডার, ওদের দুয়ারে সরকার কই ? আসানসোলের একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক বন্দনা বোস, রেবা দত্তরা বললেন, “ওষুধ থেকে শুরু করে আরও নানা কিছু, সব বিষয় তো পরিবারের কাছে জানানো যায় না । নিজের হাতে কিছু টাকা এলে শেষ বয়সের শখও মেটে । পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হলে, অনেকটাই ভরসার জায়গা তৈরি হয় ।”
আরও পড়ুন :Street School in Jamuria : ‘রাস্তার মাস্টারমশাই’-এর দুয়ারে স্কুলে বেড়েই চলেছে পড়ুয়ার সংখ্যা
হীরাপুরের প্রান্তিক বৃদ্ধাবাসের সেবিকা অর্চনা ঘোষ বলেন, “বৃদ্ধবৃদ্ধাদের শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ, যে দুয়ারে সরকারের শিবিরে গিয়ে লাইন দিয়ে তাঁরা স্বাস্থ্যসাথী বা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম ফিলাপ করতে পারবেন না । তাই বৃদ্ধাশ্রমেই এমন শিবিরের আয়োজন করা হোক ।”
বিষয়টি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির কাছে জেনেই বৃদ্ধাশ্রমে খোঁজখবর নিয়েছেন আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য চন্দ্রশেখর কুণ্ডু । তিনি বলেন, “অনেকের আধার কার্ড নেই, অনান্য নথিও নেই । আগে সেগুলির ব্যবস্থা করতে হবে । তারপর স্বাস্থ্যসাথী বা অনান্য সরকারি সুবিধের বিষয়গুলি দেখা হবে । নিশ্চয় ব্যবস্থা হবে কিছু ।”
আরও পড়ুন :Asansol municipal corporation : পার্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের বিপুল খরচ আর বহন করবে না আসানসোল পৌরনিগম