আসানসোল, 10 অগস্ট: গরুপাচার মামলার শুনানি দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে ইডি ৷ কেন মামলা দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুললেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ বৃহস্পতিবার আসানসোল সিবিআই আদালতে গরুপাচার মামলার শুনানি ছিল ৷ সেখানে এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া অনুব্রত মণ্ডলকে তিহাড় জেল থেকে ভার্চুয়ালি পেশ করা হয় ৷ তখনই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এই প্রশ্ন করেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি ৷
বিচারককে অনুব্রত মণ্ডলে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আমার মামলা দিল্লি যাচ্ছে কেন ?’’ বিচারক জানান, ইডি একটা আবেদন করেছে । এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি । বিচারকের প্রতি অনুব্রতর আবেদন, "আমার বাড়ি বীরভূমে, সাক্ষীদের বাড়িও বাংলায় । তাহলে মামলা দিল্লিতে যাচ্ছে কেন ?’’
বিচারক অনুব্রত মণ্ডলকে বলেন, "আইনসভার আইন সবার জন্য সমান ।" এরপর অনুব্রত মণ্ডল বিচারকের কাছে জানতে চান, ‘‘আমি কি হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট যেতে পারি ?" বিচারক তাঁকে বলেন, "অবশ্যই, সেজন্যই তো হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট রয়েছে ।"
উল্লেখ্য, গত দু’বার তিহাড় জেল থেকে কারিগরি বিভ্রাটের কারণে ভার্চুয়াল শুনানি করা যায়নি অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেনের । বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল । এ দিন অবশ্য অনুব্রত মণ্ডলকে ভার্চুয়াল শুনানিতে হাজির করানো হয়েছিল ।
আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী মোবাইলের ভিডিয়ো কলে তিহাড় জেল থেকে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলেন । বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘অনুব্রতবাবু আপনার শরীর কেমন আছে ?’’ উত্তরে অনুব্রত জানান, ভালো ।
এরপর বিচারক অনুব্রতকে জিজ্ঞাসা করেন "ইনহেলার নিচ্ছেন ?" অনুব্রত উত্তর দেন, "ইনহেলার, লিমুনাইজার দুটোই নিচ্ছি ।" বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অনুব্রত মণ্ডলকে বলেন, "আপনাকে অনেক রোগা লাগছে ।" অনুব্রত সায় দিয়ে বলেন, "হ্যাঁ ৷ কিন্তু ওষুধপত্র সব আগের মতোই খেতে হচ্ছে ।"
এরপরেই বিচারকের প্রতি অনুব্রত মণ্ডলের কাতর আবেদন, "সাহেব, আমার একটা অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিন । শ্রমিকদের পেমেন্ট হচ্ছে না ।’’ বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অনুব্রতকে বলেন, "আপনার মুখের কথায় এটা করা সম্ভব নয় । আইনজীবী মারফৎ আবেদন করতে হবে । আমার কাছে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে একটিও আবেদন আসেনি ।"
আরও পড়ুন:রাজ্যে ফেরার পথ কি তবে বন্ধ কেষ্ট'র ? গরুপাচার মামলা দিল্লি নিয়ে যেতে চায় ইডি
অন্যদিকে সায়গল হোসেন হাতে ব্যথার কারণে ভার্চুয়াল শুনানির সময় তিনি হাজির ছিলেন না । এমআরআই করাতে গিয়েছিলেন তিনি । বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডল বা সায়গল হোসেনের জন্য নতুন করে জামিনের আবেদন করা হয়নি । বিচারক পরবর্তী শুনানির দিন 12 সেপ্টেম্বর ধার্য করেছেন ।