প্রাপ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমজনতা চন্দ্রকোনা, 19 ফেব্রুয়ারি:দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে চারবছর ৷ তারপরও ক্ষতিগ্রস্ত অ্য়াম্বুল্য়ান্স সারাই করার, কিংবা সেটিকে বাতিল করে নতুন অ্য়াম্বুল্য়ান্স আনার কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি ৷ বদলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত, ভাঙাচোরা, কার্যত কঙ্কালে পরিণত হওয়া অ্য়াম্বুল্যান্সটিকেই ত্রিপল চাপা দিয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে ! ঘটনার জেরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা পৌরসভাকেই (Chandrakona Municipality) কাঠগড়ায় তুলছেন বাসিন্দারা ৷ তাঁদের বক্তব্য, আপদকালীন সময়ে পৌরসভার তরফ থেকে প্রাপ্য অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা (Ambulance Service in Chandrakona) পান না তাঁরা ৷ ফলে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অন্য ব্যবস্থা করতে হয় তাঁদের ৷
সূত্রের খবর, 2019 সালে কলকাতা যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চন্দ্রকোনা পৌরসভার এই অ্য়াম্বুল্যান্সটি ৷ সেই সময় সেটিকে সারানোর জন্য স্থানীয় একটি গ্যারাজে পাঠানো হয় ৷ কিন্তু, সেই কাজ না হওয়ায় অ্য়াম্বল্যান্সটিকে ক্রেনের সাহায্যে তুলে আনা হয় ৷ পরে গোঁসাইবাজারের অন্য একটি গ্যারেজে অ্য়াম্বল্যান্সটি সারাতে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ ৷ সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানেই অ্যাম্বুল্য়ান্সটি ত্রিপল চাপা হয়ে পড়ে রয়েছে !
আরও পড়ুন:ক্ষীরপাইয়ে পড়ে থেকে নষ্ট সাংসদ তহবিলের টাকায় কেনা জলের ট্যাংক ও অ্যাম্বুল্যান্স
ওই গ্যারেজের মালিক শুকদেব কোটাল জানান, "অ্য়াম্বুল্যান্স সারাতে কত টাকা পড়বে, তা জানতে চেয়েছিল পৌর কর্তৃপক্ষ ৷ সেই মতো আমি সম্ভাব্য খরচের হিসাব তুলে দিই ৷ কিন্তু, সেই টাকা আজ পর্যন্ত আসেনি ৷ তাই অ্য়াম্বুল্য়ান্সও আর সারানো হয়নি ৷"
অন্যদিকে, চন্দ্রকোনা পৌরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে আরামবাগ লোকসভার সাংসদ অনিল বসুর সাংসদ তহবিল থেকে টাকা খরচ করে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছিল চন্দ্রকোনা পৌরসভাকে ৷ রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় সেটি বহু আগেই বাতিলের খাতায় চলে গিয়েছে ৷ এরপর 2014 সালে চন্দ্রকোনা পৌরসভাকে আরও একটি অ্যাম্বুল্য়ান্স দিয়েছিলেন সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন ৷ তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা এতে খরচ করা হয়েছিল ৷ এই অ্য়াম্বুল্য়ান্সটিই পরবর্তীতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৷ আরামবাগ লোকসভার সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের দেওয়া একটি বাস অ্যাম্বুল্যান্স বর্তমানে চন্দ্রকোনা পৌরসভায় থাকলেও সেটি বড় কোনও ঘটনা ছাড়া ব্যবহার করা হয় না ৷ তাছাড়া, সেটি অলিগলিতে ঢুকতেও পারে না ৷
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজীব পালের গলায় ৷ তাঁর অভিযোগ, "গ্যারাজে পড়ে থাকা অ্যাম্বুল্যান্সটি সারাইয়ের জন্য কোনও তহবিল তৈরি করেনি পৌরসভা ৷ ফলে আমজনতা বিপাকে পড়ছে ৷ এর ফলে যেকোনও দিন অনভিপ্রেত কোনও ঘটনা ঘটতে পারে ৷ তেমন কিছু ঘটলে পৌরসভাকেই তার দায় নিতে হবে ৷"
পৌরপ্রধান প্রতিমা পাত্র এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমাদের হাতে একটি অ্যাম্বুল্যান্স আছে ৷ কিন্তু, সেটি বাস ৷ গলিতে ঢোকে না ৷ আগে একটি ছোট অ্যাম্বুল্যান্স ছিল ৷ সেটি কয়েক বছর আগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৷ সারাইয়ের জন্য বর্তমানে চন্দ্রকোনার একটি গ্যারাজে রয়েছে সেটি ৷ জানি না সেটি কী অবস্থায় রয়েছে ! আমরা ইতিমধ্যেই গ্যারাজ মালিককে ডেকেছি, সেটি কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানার জন্য ৷ পাশাপাশি, নতুন একটি অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়ার জন্যও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে ৷"